রোহিঙ্গা সমস্যায় আমাদের সার্বভৌমের প্রশ্ন জড়িত
মোঃ শফিকুল ইসলাম।
আজ খবরে দেখলাম কয়েকদিনে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে।অবাধ সীমান্ত হলে এ সংখ্যাও অনেক বেড়ে যেত,ইতিপূর্বে ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে যাদের সমস্যা এখনো আমাদের জাতিয় সমস্যা।রোহিঙ্গার সাথে আমাদের দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই মায়ানমারের আরাকান বা রাখাইন রাজ্যর অধিবাসীরা হলো রোহিঙ্গা। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বাস দক্ষিনে বার্মার মগ ও উত্তরে রোহিঙ্গা। এই রোহিঙ্গাদের ভাষায় চট্রগামের স্থানীয় উচ্চারনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।মগরা এক সময় আমাদেরকে খুব জ্বালিয়েছিল।তাদের হঠাৎ আক্রমন,লুটতারাজ এতটাই অতিষ্ঠ আমরা ছিলাম যে যার কারনে আজও আমরা কথায় কথায় বলি মগের মুল্লুগ।মগরা ঢাকা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।আরাকানের রাজা নারামেখলার উত্তরাধিকারেরা ১৪৩৭ সালে কক্সবাজারের রামু ও ১৪৫৯ সালে চট্রগ্রাম দখল করে।১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্রগ্রাম আরাকানের দখলে ছিল।ফলে তাদের সাথে আমাদের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক জড়িত।।আমার আশঙ্খাটাই এই জায়গায়,কেননা রোহিঙ্গা নিয়ে যে ভাবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাতে তাদের প্রতি মানবতা দেখার আগে আমাদের কয়েকটি বিষয় ভাবতে হবে
যেহেতু রোহিঙ্গারা মুসলিম তাই এ সমস্যা একাই আমরা মোকাবেলা করবো কেন?৫৭টির অধিক মুসলিম দেশ আছে,মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া,কাতার,সৌদি,তুরস্কর মতো ধনী মুসলিম দেশ আছে তাদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম ওআইসি আছে,তাই এ সমস্যা আমাদের সম্মিলিত ভাবে মোকাবেলা করা উচিত।
ইরান,সিরিয়া,ইয়ামেন,কাতারের উপর জাতিসংঘের অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপে সৌদি ব্যাপক ভুমিকা পালন করলেও মায়ানমারের প্রশ্নটি কেন এখনো জাতিসংঘে ওঠলোনা এটা প্রতিটি মুসলমানদের দাবি করা উচিৎ।
মুসলমানদের সবচেয়ে বেনিফিসিয়ালি রাষ্ট্র সৌদি।তারা আল্লাহর রহমতে হজ্ব ও ওমরা থেকে সর্বাধিক আয় করে,সেই আয় কেন রোহিঙ্গাদের মতো শরনার্থীদের পিছনে ব্যয় হবে না?এ প্রশ্নটি করা উচিৎ।
তুরুস্ক রোহিঙ্গাদের খরচ দিতে চেয়েছে আশ্রয় দিবেনা কেন?
মধ্যপ্রাচ্যর প্রায় দেশে এখনো এক বর্গকিলোমিটারে ৭৬ জন লোক বাস করে আর আমাদের দেশে ১০০০ এর অধিক,তাই সেই সব মুসলিম দেশ এই কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে তো অনায়েসে জায়গা দিতে পারে। তা না দিয়ে আমাদের উপর চাপ দিচ্ছে কেন?
মায়ানমারে সামরিক আক্রমন বাংলাদেশ একাই কেন চালাবে?অন্য মুসলিম দেশরা কেন থাকবেনা?
সীমান্তে অপরাধ,মাদক,চোরাচালানের জন্য এই রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে একটা গোষ্ঠী ,
দুঃখজনক হলেও সত্য এই রোহিঙ্গাদের দিয়ে আমাদের দেশের এক শ্রেনী অপরাধ করায়,রাজনীতির উত্তাপ ছড়ায়,ভোটের ফ্যাক্টর বানায়,তারাই মুসলিম মুসলিম বলে আজ যতই চিৎকার করছে, বর্তমান সরকারকে দায়ী করছে?সীমান্ত খুলে দেয়ার লম্বা লম্বা বয়ান দিচ্ছে তারাই কিন্তু এই সব অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে কেন মুসলিম বিশ্ব থাকবেনা সে প্রশ্নে নির্বিকার।রোহিঙ্গাদের শুধু বাংলাদেশ মুখি করে এ সমস্যাকে আন্তর্জাতিক ভাবে না দেখে বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা ভাবার পিছনে আমি কঠিন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।আমি
মনে করি বাংলাদেশ ছোট দেশ,অধিক জনসংখ্যা,এমনিতেই বেকারত্ব জাতিকে গ্রাস করেছে তার উপর এই বাড়তি জনসংখ্যার চাপ আমরা নিতে পারবো না,রোহিঙ্গাদের উপর যে বর্বর অত্যাচার,নির্যাতন, হচ্ছে তা এ শতাব্দির ভয়াবহ মানবতা লঙ্ঘন।তাই বিশ্বমানবতাবোধকে এই ইস্যুতে সোচ্চার হতে হবে।
(বিঃদ্রঃঅসহায় রোহিঙ্গাদের কাছে ক্ষমা চাচ্চ্ছি)
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।