৯ই ডিসেম্বর, রোকেয়া দিবস

৯ই ডিসেম্বর, রোকেয়া দিবস

আব্দুল্লাহ আল নোমান,
বেগম রোকেয়া বাংলার নারীবাদী চিন্তা ও লেখালেখির অগ্রদূত ছিলেন। 1880 সালের ৯ই ডিসেম্বর তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশী এক মহীয়সী নারী। তিনি সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে একজন স্থায়ী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন, যা যুগের জন্য একটি নতুন উদাহরণ স্থাপন করতে সাহায্য করে। আজ তার ১৩৭ তম জন্ম ও ৮৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

বাংলা নারী জাগরনের অগ্রদূত এই নারী ছিলেন বাংলা গদ্যের বিশিষ্ট শিল্পী। রোকেয়ার সাহিত্যিক কর্মজীবন প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ, কবিতা, ছোটগল্প, এবং বইগুলি ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে। সমাজের কুসংস্কার ও জড়তা দূর করার জন্য তিনি অসাধারণ পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও হৃদয়গ্রাহী রচনা করেন। তার সবচেয়ে সুপরিচিত রচনা হল সুলতানার স্বপ্ন। একটি নারীবাদী ইউটিপিয়া চিত্রিত একটি বিজ্ঞান-কল্পিত অংশ। তিনি প্রগতিশীল মতামত এবং কৌতুকপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি প্রকাশ করতে প্রথম নারী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ‘পদ্মরাগ’ নামের আরও একটি উপন্যাস রচনা করেন। ‘মতিচূর’ ও ‘অবরোধবাসিনী’ তার তাৎপর্যপূর্ণ গদ্যগ্রন্থ। তার সব রচনাই সমাজ জীবনের বাস্তবতার গভীর উপলব্ধি থেকে রচিত।

ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম নারীদের শিক্ষার জন্য তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন এর উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণায় তাঁর জ্ঞান অর্জনের পথ সুগম হয় এবং বিরূপ সমালোচনা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতারর মুখেও তিনি নারীশিক্ষার লক্ষ্য থেকে সরে আসেন নি। সুলতানার স্বপ্ন লেখার কয়েক বছর পরে তিনি কলকাতায় বাংলা মুসলিম নারীদের প্রথম স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যা মেয়েরা ও মহিলাদের জন্য একটি সফল স্কুল। পরে তিনি নারীশিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সহায়তা করার জন্য উন্নত মুসলিম নারী সমিতি গঠন করেন। রোকেয়া নারী-পুরুষের সমতা বিধান ও নারীশিক্ষার জন্য সমস্ত জীবন উৎসর্গ করেন।
১৯৩২ সালের ৯ই ডিসেম্বর বাংলার এই মহীয়সী নারীর জীবনাবসান ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *