“জীবনের অভিমুখ এবং একজন সঠিক মানুষ”

“জীবনের অভিমুখ এবং একজন সঠিক মানুষ”

Rajarhatbd.com
লেখক – _সুব্রত কুমার দাস
টেরিটরি ম্যানেজার, বিকাশ লিমিটেড
বাসে উঠলেই একটা প্রশ্ন আমার মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করে। অনেককে প্রশ্নটি করেছি, কিন্ত মনের মতো কোন উত্তর পাইনি।
বাস/গাড়ী যিনি চালান, তিনি বেশ বড়সড় গ্লাসে রোডের সবকিছু বেশ ঝকঝকে দেখতে পান। বাসের দু পাশে সাইড মিররও থাকে। তারপরও কেন একজন হেল্পার লাগে???

ডাইনে ক্লিয়ার, বামে ডাবল। সামনে হাল্কা ব্রেক। বায়ে মোড়, হালকা চাপেন, সামনে প্লাস্টিক। – শুধু এইসব বলার জন্যই কেন একজন আস্ত মানুষ প্রয়োজন? যিনি বাস চালাচ্ছেন তিনি তো দিব্যি সব দেখতে পান, তবে সাইড থেকে কেন তাকে এসব বলে দিতে হয়?

উত্তরটা খুব সাদাসিধে। যিনি এতোগুলো মানুষের প্রাণের রেস্পন্সিবিলিটি নিয়ে গাড়ি চালান, স্বভাবতই তার মাথায় প্রচুর প্রেশার থাকে। তাই ডানে বায়ে সবকিছু খেয়াল করে, একমনে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া তার পক্ষে খুব সহজ কাজ না।

আমাদের জীবনের গাড়িগুলো চালাবার জন্যও একজন হেল্পার লাগে।
ডানে বিপদ, বায়ে সংশয়, সামনে কাচা রাস্তা – এসব বলার জন্য জীবনে একজন মানুষ লাগে।
হ্যাঁ, আপনি জানেন সামনে বিপদ, পিছনে আতংক, ডানে সংশয়, বায়ে ভরসা। তবুও একজন মানুষ লাগে যে আপনার পাশে থেকে আপনাকে সঠিক রাস্তাটা দেখিয়ে দেবে।
উঁহু, সে আপনার জীবন গাড়িটা কখনোই চালিয়ে দেবেনা, আপনার মাথায় জাকিয়ে বসা কঠিন সব দায়িত্বগুলোর ভার নিজের কাঁধে নেবেনা। সে কখনোই উপদেশের ফুলঝুরি উড়িয়ে আপনাকে ঠিক রাস্তায় আসবার জন্য টানাহেঁচড়া করবেনা। সে শুধু রাস্তার অবস্থাটা আপনাকে জানিয়ে দেবে মাত্র।

এই “হেল্পার “জাতীয় মানুষগুলোকে জীবনে খুব প্রয়োজন। না থাকলে মানুষকে জীবনের গাড়িটা একা একা চালাতে হয়। ডানে সাইড দেবো! নাকি এখন বায়ে মোড় নেবো?এই দ্বিধা কাটবার আগেই সামনে থেকে কেউ এসে চুরমার করে দেয় সবকিছু।

একটা সুখী জীবনের জন্য বস্তা বস্তা টাকা আর বালতি বালতি ভালোবাসা প্রয়োজন কিনা জানিনা। তবে এতটুকু জানি, জীবনটা নিরাপদে, স্বস্তিতে আর একটু শান্তিতে কাটাবার জন্য একজন “হেল্পার ” অবশ্যই দরকার ।