শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

নাইস বাবু:
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র ১৮ দিন বাকি। এ উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউ পির বৌদ্দের বাজারে মৃৎশিল্পীরা।
জানা গেছে, উপজেলার ১১৪ টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। এ উৎসব উপলক্ষে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। এখন চলছে বাঁশ,খড় ও কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি ও প্রলেপ দেওয়ার প্রাথমিক কাজ। কাজের চাপে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও প্রতিমা তৈরিতে সহযোগিতা করছেন। পরম যত্নে মৃৎশিল্পীরা দেবীর মুকুট, হাতের বাজু, গলার মালা,শাড়ির নকশা, প্রিন্ট ও ঠাকুরের চুল তৈরি করছেন। এরপর প্রতিমায় দেওয়া হবে রংতুলির আঁচড়।
মৃৎশিল্পীদের সারা বছর তেমন কদর না থাকলেও শারদীয় দুর্গা উৎসবের আগে তাদের কদর বেড়ে যায়। গত বছরের চেয়ে এ বছর বাঁশ, খড় ও মাটিসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করতে দুই থেকে তিন হাজার টাকার বেশি খরচ পড়ছে বলে জানান মৃৎশিল্পীরা।
তারা আরো জানান, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও কাজের দাম বাড়েনি। শুধু বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতেই প্রতিমা তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এছাড়া উপায়ও নাই, মূলত প্রতিমা তৈরি করেই চলে তাদের সংসার।
মৃৎশিল্পী বৌদ্ধ নাথ মালাকর ও নিমাই মালাকর বলেন, এ বছর ১৫ টি প্রতিমার তৈরির অর্ডার পেয়েছি। সঠিক সময়ে প্রতিমা সরবরাহ করার জন্য চার থেকে পাঁচজন সহযোগী নিয়ে রাত দিন জেগে কঠোর পরিশ্রম করছি। বর্তমানে বাঁশ, রঁশি, খড়, মাটি ও রংয়ের দাম বাড়লেও সে হারে দেবীমূর্তির দাম বাড়েনি। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা দরে চুক্তি হয়েছে।আবার ভাল প্রতিমার ১৮-২২ হাজার টাকা দরে চুক্তি হয়েছে সহযোগীদের মজুরি ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা আয় হবে। এ শিল্প থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, দুর্গাপূজায় প্রতিটি মণ্ডপে সাজ-সজ্জা ও বাদ্যবাজনা বাবদ পূজা কমিটি অঢেল টাকা খরচ করলেও এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের মজুতরি বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে চান না। তিনি এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র -নাথ কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক বাবু রামজিবন কুন্ড জানান, এ বছরেও ১১৪ টি পূজা মণ্ডপের শারদীয় দুর্গা উৎসব শান্তির্পূণভাবে পালিত হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী এ উৎসব পালিত হবে। এ বছর দেবী দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে আসবেন, আর যাবেন দোলায় চড়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহ: রাশেদুল হক জানান, এ বছর পূজা মণ্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃষ্ণ কুমার সরকার জানান, পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি আনসার বাহিনীর সদস্যরাও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন । এ ছাড়াও শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিশেষ টিম থাকবে।