রাজারহাটের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা মহসীনের স্মরণে স্মৃতি ফলক স্তম্ভ

রাজারহাটের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা মহসীনের স্মরণে স্মৃতি ফলক স্তম্ভ

এ.এস.লিমন ভূরুঙ্গামারী থেকে ফিরে :
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউপির মল্লিকবেগ এলাকার শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীনের স্মরণে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতি ফলক স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা তুলে ধরতে ১১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পর ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সোনারহাট সপ্রাবি পিছঁনে এ স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে।
কবরের কাছে যাওয়ার রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। এ কারণে অনেকেই কবরের কাছে এসে দাঁড়িয়ে কবর জিয়ারত করেন, সোমবার শহীদ মহসীনের কবরের সামনে গিয়ে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
দেখা গেছে, সোনারহাট প্রাঃ বিদ্যালয়ে পিছঁনে স্থায়ী (ক্রয়কৃত) ১ শতাংশ জায়গায় শহিদ মহসীনের কবর। কবরটি সম্পূর্ণ হালকা সাদা রংয়ের মোজাইক দিয়ে বাঁধাই করা। কবরের সামনে একটি নামফলকে লেখা শহিদ মহসীনের মৃত্যুর তারিখ: ৩০ আগষ্ট ১৯৭১ ইং রবিবার।
এ ব্যাপারে শহিদ মহসীনের মা মরিয়ম বেওয়া বলেন, ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসের শেষের দিকে ভূরুঙ্গামারী সোনারহাট এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঘেরাও করে গুলি চালায়।বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। টানা ১২ ঘন্টা যুদ্ধে মহসীন (বীর মুক্তযোদ্ধা) ঘটনাস্থলে সম্মূখ যুদ্ধে শহিদ হন।
আর ওই এলাকায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছঁনে শহিদ মহসীন ( বীরমুক্তিযোদ্ধা )এর দাফন করা হয়।
তিনি আরো জানান, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পেছনে মহসীনের সাহসীকতা মুখ্য ভূমিকা ছিল। মহসীন ১৯৭০ সালে নাজিম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী ছাএ ছিল। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর ট্রেইনিং করে বাসায় এসে ওই রাতে তার স্ত্রী পাকিজা বেগমকে সন্তান সম্ভবা রেখে আমাকে না বলে যুদ্ধে চলে যায়।
শহিদ মোহসীন ব্যক্তিগত জীবনে তারা ৪ ভাই ৭ বোন ও মা মরিয়ম বেওয়া (৯৭) ও বিপ্লব নামের একটি পুএ সন্তান আছে। তবে ১০বছর থেকে তার পুএ সন্তান বিপ্লবের কোন খোজ জানেন না স্বজনরা।তার পাওয়া ভাতা ও রেশনে চলে তার বৃদ্ধ মা সহ তার রেখে যাওয়া পরিবার।
মহসীন শহিদ হওয়ার পর থেকে তার শোকে তার মা মরিয়ম বেওয়া(৯৭) এখনোও ঘুমের ঘোরে হুহু করে কান্নায় বাঁলিশ ভিজিয়ে ফেলে,এ সব শুনার কেউ নেই। শুধু কান পেঁতে শুনে দেয়াল। এ রকম শত শত মায়ের কান্নায় এদেশ, এই স্বাধীনতা।
সোমবার শহীদ মহসীনের কবর দেখতে গিয়ে দেখা হয় দৈনিক যুগান্তর পএিকার স্হানীয় সাংবাদিক আরমান নামের এক সহকর্মী । তিনি বলেন শহীদ মহসীন ( বীরমুক্তিযোদ্ধাকে ) কে নিয়ে একটি বই লিখবো এবং তার কবর জিয়ারত করে লেখা শুরু করবো।
মহসীনের মায়ের ৪৭ বছরে দাবী দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শহিদ মহসীনের( বীর মুক্তিযোদ্ধার ) স্মৃতিফলক নির্মাণ হয়েছে।