রাজারহাট বিডি ডট কমে প্রকাশিত সেই ১১৯ বছরের জোবেদ আলীর সাথে কুশল বিনিময় করলেন সরকারের সচিব, দিলেন সৌজন্য উপহার

রাজারহাট বিডি ডট কমে প্রকাশিত সেই ১১৯ বছরের জোবেদ আলীর সাথে কুশল বিনিময় করলেন সরকারের সচিব, দিলেন সৌজন্য উপহার

আসাদুজ্জামান এইম রতন:

গত বছর দু’য়েক আগে হঠাৎ-ই প্রথম সাক্ষাৎ হয় এই প্রবীণ মানুষটির সাথে। কথার এক পর্যায়ে তার বয়স জানতে চাইলে বলেন, ‘১৯১২ সালে প্রাইমারী পাশ’। তার অর্থ উনার বয়স তখন ১১৭ বছর বা একটু বেশী। আমার দাদুকে হারিয়েছি ২০০৭ সালে।

বয়স্ক মানুষকে দেখলে কথা বললে ভালো লাগে। জীবনধর্মে এ-ই বয়স্ক মানুষগুলো শিশুর মতো। জীবনলব্ধ বোধগুলো পরিপক্ক। মোবাইল ক্যামেরা চালু করে উনার সাথে একটা কথোপকথন ভিডিও করলাম। সংরক্ষণ করার জন্য আমার ইউটিউব চ্যানেল -এ আপ করলাম।

পরে রাজারহাট বিডি ডট কম এর সম্পাদক প্রভাষক এনামুল হক ভাইকে ভিডিওটি দেখালে উনি বললেন, আমাদের পোর্টালে দেয়া যেতে পারে, বললেন জীবন যদিও নির্ধারিত কিন্তু সবার জানার দরকার দীর্ঘজীবন লাভ করতে সরলতা কত কার্যকরী।

যাই হোক ভিডিও ও নিউজ, পোর্টালে আপ করার পর সেটি মানুষের নজর কাড়ে। পরে ক্রমানয়ে বিভিন্ন পোর্টাল, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এই প্রবীণ মানুষটির কথাগুলি। গতকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা, রাজারহাট মুহ. রাশেদুল হক প্রধান, মহোদয় আমাকে ফোন করে জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জনাব শেখ মুজিবুর রহমান এনডিসি কুড়িগ্রাম এসেছেন, তিনি জোবেদ আলী চাচা সম্বন্ধে জেনেছেন,তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে চান। স্যার এর কথামতো বিডি থেকে আমরা জোবেদ দাদুর বাড়ী যাই এবং উনাকে নিয়ে ইউএনও স্যারের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিই।

স্যার আন্তরিকতার সহিত গাড়ি করে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে যান। পরে রাতে এই দাদুর সঙ্গে আমরা কথা বলতে যাই। তিনি অত্যন্ত আপ্লুত স্মরে বলেন, সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছি আজ।

ধন্যবাদ ও ভালোবাসা সচিব মহোদয় এর প্রতি এবং কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সহ, কুড়িগ্রাম এর গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গকে ও অবশ্যই ইউএনও রাজারহাট মহোদয়কে যেনারা এরকম একটি কুশল বিনিময় কথোপকথন আন্তরিক মুহুর্ত এই প্রবীণ মানুষটিকে উপহার দিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে আমি, আমরা অনেক জরুরী কাজের ভীড়ে, এগিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় প্রবীণ এই মানুষগুলোকে আমরা হামেশাই গুরুত্ব দেইনা।

কিন্তু এমন একসময় ছিলো এই প্রবীণ মানুষগুলি ছিলো কারও সমস্ত আবদার পুরণকারী বাবা কিংবা মা বা অভিভাবক। জীবন স্রোতে টগবগে ভালোবাসা, খাবার উৎপাদনকারী এ-ই মানুষগুলোই একসময় হয়ে যায় বড় একা।। গল্প করার জন্য খুজে বেড়ায় কাছের মানুষকে। কিন্তু তার যে বয়স হয়েছে। পারিবারিক মুল্যবোধ তৈরী, সামাজিক নীতি নৈতিকতা, মানবিক আচরণই পারে নবীন ও প্রবীণ এর এই ফাকা সম্পর্ককে পূরণ করতে।

পরিবারের বাইরে প্রবীণ হৈত্যেষী ক্লাব তৈরী করে সমচিন্তা ও সমবয়স এর এই মানুষগুলোকে রাখা যেতে পারে স্বস্তিতে, শান্তিতে। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে পাওয়া যেতে পারে জীবনলব্ধ দামী পরামর্শ, অফুরন্ত মমতা। বয়স থেমে থাকেনা, আমি আমরা প্রবীণ হবো, তাই ভাবতে দেরী কেন?