অনলাইন সাংবাদিকতার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

অনলাইন সাংবাদিকতার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ

রমেশ চন্দ্র সরকার:

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ( আইসিটি ) ব্যবহার এদেশে খুব বেশি দিনের নয়। হাটিহাটি পা পা করে সর্বক্ষেত্রে আইসিটির ব্যবহার এখন লক্ষনীয়। সংবাদ মাধ্যমেও এর প্রভাব পরেছে বৈকি।

প্রিয় পাঠক, আজকে কলম ধরলাম অনলাইন সাংবাদিকতা তথা অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ পত্রের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে। নব্য ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও অনলাইন ভিত্তিক সংবাদপত্রগুলো সংবাদ জগতে আমূল পরিবর্তন এনেছে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইতিমধ্যে প্রায় সাত হাজার নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। যা যাচাই সাপেক্ষে নিবন্ধনধীত হবে। এর বাহিরে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে অসংখ্য নিউজ পোর্টাল।

এবার আসা যাক, প্রিন্ট মিডিয়া জগতের কথা। এ মহুর্তে দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার সঠিক সংখ্যা কত তা বলা মুশকিল। তবে সংখ্যাটি নেহাত কম না।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত ৩০শে জুন ২০১৮ তারিখের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে নিবন্ধিত পত্র-পত্রিকার সংখ্যা ৩০৬১টি (অনলাইন গণমাধ্যম অন্তর্ভূক্ত নয়) যার মধ্যে ১২৬৮টি ঢাকা থেকে এবং ১৭৯৩টি অন্যান্য জেলা থেকে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে দৈনিক ১২১৩টি, অর্ধ-সাপ্তাহিক ৩টি, সাপ্তাহিক ১১৮১টি, পাক্ষিক ২১৩টি, মাসিক ৪১০টি, দ্বি-মাসিক ৮টি, ত্রৈ-মাসিক ২৮টি, চর্তুমাসিক ১টি, ষান্মাসিক ২টি এবং বার্ষিক ১টি পত্রিকা রয়েছে।

কালের গর্ভে অনেক পত্রিকা হারিয়ে গেলেও প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পত্রিকা। আবহমান কাল ধরে প্রিন্ট মিডিয়া গুলো শিক্ষা, সংস্কৃতি,রাজনীতি,আন্দোলন,সংগ্রাম,শিল্পী, সাহিত্যিক,কবি,লেখক তৈরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখছে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

এক সময় প্রিন্ট মিডিয়ায় সৃজনশীল লেখক ও সাংবাদিকের কদর থাকলেও বর্তমানে নেই বললে চলে। আগে যেখানে দীর্ঘকাল লেখার পর কোনো পত্রিকার সাংবাদিকতার স্বীকৃতি মিলতো কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন।

দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার গুলোর অধিকাংশই বর্তমানে অর্থের বিনিময়ে সংবাদ প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে থাকে। এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায়।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়,এই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে সৃজনশীল লেখক ও প্রকৃতদশা সাংবাদিকতার অপমৃত্যু হবে একথা বলা যায়। ফলে অপ সাংবাদিকতায় ভরে যাবে আমাদের প্রিন্ট মিডিয়া জগৎ।

একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। পক্ষান্তরে অনলাইন পত্রিকা কিংবা মিডিয়া গুলো যেভাবে নিজেকে জাহির করে যাচ্ছে এবং তাদের পালে যেভাবে হাওয়া লাগতে শুরু করছে। এতে করে একদিন হয়তো মিডিয়া জগৎ অনলাইন সাংবাদিকতার দখলে থাকবে। একথা বললে নিশ্চয়ই ভুল হবে না।

কারণ কোনো ঘটনা ঘটা মাত্র অনলাইন সাংবাদিকতাই পারে দ্রুত তুলে ধরতে। যার ফলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা হল অনলাইন সাংবাদিকতায় সৃজনশীলতার মূল্য অনেক।

এখানে একদিনে সাংবাদিক হওয়া কিংবা অর্থের বিনিময়ে সাংবাদিক হওয়া এমনটা ভাবা যায় না। তবে অত্যন্ত অল্প সময়ে অসংখ্য অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়ার আবির্ভাব সুখকর হলেও ভূঁইফোর অনলাইন মিডিয়া গুলোর প্রচার বন্ধ করে, সঠিক ও নির্ভরযোগ্য অনলাইন মিডিয়া গুলোর মূল্যায়ন করা হলে সবার জন্য মঙ্গল হবে। এই হউক মোদের প্রত্যাশা।

লেখক

শিক্ষক ও সাংবাদিক।