রাজারহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে ইটভাটা , কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়- রাজারহাট বিডি

রাজারহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে  ইটভাটা , কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়- রাজারহাট বিডি

ভূমি খেঁকোদের নগ্ন থাবায় উর্বর বহুমাত্রিক ফলজ ও ফসলি কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে এ ডি বি ইটভাটায়। উপজেলার রাজারহাট ইউপির শেষপ্রান্তে সিংগারডাবড়ী বাজার হইতে ঘড়িয়াল ডাঙ্গা বাজারের একমাত্র রাস্তার পাটোয়ারি পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুর্বদিক জমিতে প্রায় নয় বছর পুর্বেই তৈরি হয়েছে এডিবি ইটভাটা।

জানা যায় ২০১০ সালে পাকা রাস্তার বটবৃক্ষের পুর্বের জমিতে তৈরি হয়েছে এডিবি ব্রিকস।ইট পোড়ানো কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কয়লা।আর ইট পোরানোর দুষিত ধোয়া বের হচ্ছে চিকনি দিয়ে।ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে রয়েছে কিশোর শ্রমিক।

প্রতিদিন ৮-১০টি মাহিন্দ্র ট্রাক এবং ১০ ট্রলি ব্যবহৃত হচ্ছে এডিবি ইটভাটায়।এডিবি ইটভাটা থেকে ১কিঃ মিঃ মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ,কেজী,এডুকেয়ার, বালিকা, বিদ্যালয়,মাদ্রাসা,উচ্চ বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়সহ বেস কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের,সকল ছাত্রছাত্রীর চলাচলের একমাত্র এই পথ।

পথটি বর্তমানে মাটি ভর্তি মাহিন্দ্র ট্রাক্টরের রাজত্ব প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে শিক্ষার্থী। ফলে দুশ্চিন্তায় থাকে অভিভাবকগণ। মিলছে না বিশুদ্ধ বায়ু, মানুষের স্বাস্থ্যঝুকি।বর্তমানে আবাদি জমিগুলোতে একের পর মাটি বিক্রিতে ডোবা-নালা খাল ও বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে ।

কথা হয় মাটি বিক্রেতা শহিদুল্লাহ, জানান ছয় শতক জমির মাটি ১২০০০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি,কিন্তু মাটি বিক্রিতে ভুমি অফিসের অনুমতি লাগে আমার জানা নাই। পার্শবর্তী জমির মালিকগণ একাধিক অভিযোগ করে বন্ধ হয়নি কৃষি জমি থেকে মাটি গ্রহন। দিন-রাত ট্রাক্টর, ট্রলি ও ট্রাক দিয়ে মাটি বহনের কারণে গ্রামীণ জানপদের কাঁচা-পাকা সড়কগুলো ধসে, দেবে ও ভেঙে যাচ্ছে।

এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকারি কোটি কোটি টাকায় নির্মিত রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট।প্রকৃতিতে গ্রামের পরে গ্রাম সবুজে শ্যামলে বিস্তৃন বহুমুখী কৃষিক্ষেত যেন ফুরায় না। বিগত সময়ে এডিবি ইটভাটার নির্গত ধোয়ার দুশিত কয়লার বিষাক্ত ছাই বাতাসে মিশে পুড়েছে কৃষি ফসলের খেত।

ফসলি জমি ও ফলজ বৃক্ষ, মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার বিস্তৃর্ণ সবুজ পরিবেশ। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতর এসব দেখেও না দেখার ভান করছে।

এসব বিষয়ে স্থানীয় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান,জোসনা খাতুন,মমিনুল ইসলাম,আরিফুল ইসলাম,একে এম আক্তারুজ্জামান রুবেল, জানান, প্রতিদিন বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুকি আসে অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায় থাকে কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোল ঘেসে কিভাবে ইটভাটা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র দেয় কেমনে, পাশা-পাশি একমাত্র ফজলার রহমানের ইচ্ছেই তার জমিতে তৈরি হয়েছে ইটভাটা।

ইটভাটার চারপাশের একাধিক নাম না প্রকাশে ইচ্ছুক কৃষক জানান,ফজলার ভেন্ডার নিজের স্বার্থে ভাটা করেছেন তারাতো অন্যের ভাল চায়না শুধু তাই নয় দোলার জমিতে পানি যাওয়া পথ বন্দ করে পাড় দিয়ে গাছ লাগিয়েছে আর বন্যায় আমাদের ঘড়বাড়ীসহ ফসলি জমি তলিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ফজলার রহমান বলেন,আমি টাকা নিয়ে জায়গা দিয়েছি, বন্ধ করার দায়িত্ব আমার না। স্থানীয় বসবাসকারী একাধিক লোকজন বলেন,আমরা বাতাসে ধুলাবালি আর দুর্গন্ধের ঘুমোতেই কষ্ট হয়। , একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ জানিয়ে পায়নি কোনো প্রতিকার ।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সমর কৃষ্ণ দাস আমার সংবাদকে বলেন,যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মসজিদ,কারাগার ও হাসপাতাল থাকলে ১ কিলোমিটার দুরত্ব বজায় রেখে ইটভাটা নির্মাণ করতে হবে।এবং ১ কিলোমিটারে মধ্যে যদি উল্লেখিত প্রতিষ্ঠান পড়ে সেটি হবে অবৈধ ইটভাটা।

এ বিষয়ে এডিবি ইটভাটা মালিক লেলিন সঙ্গে তিনি বলেন,আমার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সঠিক,আয়কর ভ্যাট এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের মাধ্যমে এখানে ইটভাটা নির্মাণ করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামারুজ্জামান বলছেন, মাটির উপরিভাগের ১০-১২ ইঞ্চির মধ্যে উর্বরতা শক্তি থাকে। তাই এসব মাটি খুড়ে বিক্রি করায় তা পুনরায় ফিরে আসতে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। আর বার বার তা খোঁড়া হলে ফসল উৎপাদনে স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়তে পারে। প্রতিদিন একাধিক স্থানে এই দৃশ্য এলাকাবাসির চোখে পড়লেও প্রশাসন যেন অন্ধ।

সুত্র: DAILY AMAR SANGBAD