কুড়িগ্রামে সরিষা ক্ষেতে মৌচাষে বাড়তি আয়

কুড়িগ্রামে সরিষা ক্ষেতে মৌচাষে বাড়তি আয়

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রদর্শনীমূলক সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। বোরো ধান লাগানোর আগে সরিষার বাড়তি ফলন অন্যান্য কৃষকদেরকেও আগ্রহী করে তুলেছে। পাশাপাশি সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ করেও বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন তারা।

জানা যায়, চলতি বছর উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারি সহযোগিতায় ৮ হেক্টর জমিতে ৪০টি কৃষি সরিষা প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। বোরো ধান আবাদের আগেই এই সরিষা চাষ কৃষকদের জন্য বোনাস ফসল হিসেবে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। ফলে আরও কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠেছে মধ্যবর্তী এই সরিষা চাষে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, কৃষকদের সরকারিভাবে বারি-৯, বারি-১৪, বারি-১৫ ও টোরি-৭ প্রদর্শনী প্লটের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় জাত চাষ করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভোজ্য তেলের ব্যাপক চাহিদা ও বাজার চড়া থাকায় এবারে সরিষার ভালো মূল্য পাবেন কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ মণ সরিষা ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন, ফজলুল হক ও রফিকুল জানান, জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। খরচও কম লাগে। সরিষার পড়ে বোরো আবাদে কম খরচ লাগবে বলে কৃষি অফিসাররা জানিয়েছেন। আমন ও ইরি-বোরোর পর মধ্যবর্তী এই ফসল কৃষকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। ফলে অন্যান্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

গুনাইগাছ ইউনিয়নের পূর্ব-কালুডাঙ্গা গ্রামের মৌচাষি আশরাফুল আলম সরকারিভাবে তার প্রদর্শনী সরিষা প্লটে ৭০টি মৌ বক্স বসিয়েছেন। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে মধু আহরণ শুরু করেছেন তিনি। তার মধু এখন কুড়িগ্রামের বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় এবার উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও এই কর্মকর্তা জানান।

তথ্যসূত্রঃ হুমায়ুন কবির সূর্য্য, কুড়িগ্রাম