রাজারহাটের অদম্য মাসুদ রানার ১ম বারেই বিসিএস জয়

রাজারহাটের অদম্য মাসুদ রানার ১ম বারেই বিসিএস জয়

রাজারহাট প্রতিনিধি:
রাজারহাটের মাসুদ রানা জীবনে প্রথম বারেই বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রাণীসম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।তাঁর অসামান্য সাফল্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন শুভাকাঙ্খীরা।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) বিকালে প্রকাশিত হয়েছে ৩৮ তম বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল।এ বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন ক্যাডারে ২ হাজার ২০৪ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ এর চুড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এ বিসিএস পরীক্ষায় উপজেলা থেকে দুইজন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন । উপজেলার দুই কৃতি সন্তান, মাসুদ রানা বিসিএস(প্রাণী সম্পদ) এবং আদুরী তমা বিসিএস(কৃষি)।
মাসুদ রানা উপজেলার রাজারহাট সদর ইউপির কিসামত পুনকর(শান্তিনগর)এলাকার বাসিন্দা মো.বাছের আলী ও গৃহিণী রুবি বেগমের বড় ছেলে।

জানা যায়,উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০১১ সালে এইচ.এস.সি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ।রংপুর কলেজের সকল ছাত্রের মধ্যে অন্যতম সেরা ছাত্র হিসেবে পুরস্কৃতও হয়েছিলেন মাসুদ রানা। মাসুদ রানা স্কুল জীবন থেকেই পড়া লেখার প্রতিটি ক্লাসে মেধাবির স্বাক্ষর রেখেছেন। এর আগে সে ৫ম এবং ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল।

পরবর্তিতে ভর্তি হন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।একাডেমিক পড়াশনার পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ৩৮ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে অ্যাপেয়ার্ড দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন মাসুদ রানা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা দেন।কিন্তু পরিবারের অর্থনৈতিক সহযোগীতার জন্য ফলাফল প্রকাশ আগেই বাধ্য হয়ে চাকুরিতে প্রবেশ করেন।
সে বর্তমানে মেহেরপুরে একটি সংস্থায় প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছে।বিসিএস লিখিত পরিক্ষায় পাশ করার ফলাফল পেয়ে চাকুরিরত অবস্থায় প্রস্তুতি নিয়ে ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছিলেন।

মাসুদ রানা তার প্রথম বিসিএস এর সফলতা নিয়ে এ প্রতিনিধির কাছে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন,আমি সত্যিই খুব অভিভূত যে আমার রাজারহাটের সবাই আমাকে এতটা ভালবাসে। আমি আমার জীবনের এই সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দিতে চাই আমার মা,বাবা সহ সকল স্যারদের এবং বন্ধুদের। যারা আমাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।ভবিষ্যতে আমি রাজারহাটের আর্থিক সংকটে থাকা ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কাজ করতে চাই।

মাসুদ রানা আজ সফল হয়েছে কিন্তু এই দীর্ঘ পথ কখনো মসৃণ ছিলনা,স্কুল জীবন থেকে অনেক আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে।তবে জীবনে যদি লক্ষ অটুট থাকে কোন বাধায় তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনাই তারই প্রমাণ রেখেছেন অদম্য মাসুদ রানা।তিনি শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন,দিয়েছেন মেধাবীর পরিচয়,শুধু ভাল ছাত্র হিসেবেই নয়, সদা হাসিখুশি আর সুন্দর ব্যবহারের জন্যও সবার কাছে পরিচিত।