রাজারহাটে রাক্ষুসী গ্রাসে দু’টি ক্রসবাঁধ তিস্তার পেঁটে-রাজারহাট বিডি

রাজারহাটে রাক্ষুসী গ্রাসে দু’টি ক্রসবাঁধ তিস্তার পেঁটে-রাজারহাট বিডি

বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপির খিতাবখাঁ মৌজায় তিস্তার প্রবল ভাঙ্গনে ২০টি পরিবার নদীগর্ভে চলে গেছে। পাশাপাশি বাঁধ রক্ষায় ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি’র বুড়িরহাট ক্রসবাঁধ ও বিদ্যানন্দ ইউপির গাবুর হেলান ক্রসবাঁধটি রাক্ষুসী তিস্তার পেঁটে চলে গেছে। বর্তমানে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বিলিন হয়ে যাওয়া অংশে জিও ব্যাগ ফেলে নদীর গতিপথ ঠিক রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।

এদিকে ক্রসবাঁধ সংলগ্ন ৬টি পরিবারের বসতবাড়িসহ ২০টি পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো বর্তমান সবকিছু হারিয়ে বাঁধ রাস্তায় পরিবার-পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা সমূহে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম পরিদর্শন করেন।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভাঙ্গনকবলিত ওই পরিবারগুলোর দাবী এখনও তারা সরকারি ও আধাসরকারিভাবে পর্যাপ্ত কোন ত্রাণ সামগ্রী তাদের ভাগ্যে জোটেনি। তবে শুকনো খাবার ও ২০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা তারা জানিয়েছেন। যা তাদের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি’র খিতাবখাঁ এলাকার ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো হলো-মজিদুল ইসলাম (৪৫), খবর উদ্দিন (৫৫), আকলিমা (৫২), মনজুয়ারা (৪০), শফিকুল (৩৫), তৈয়ব আলী (৬৫)। এদিকে খিতাবখাঁ ৮ নং ওয়ার্ডের ১১টি পরিবার তিস্তার গর্ভে বিলীন হওয়া পরিবারগুলো হচ্ছে- শাহআলম (৩২), আব্দুল বাতেন (৩০), কাফি (৫৫), দেলওয়ার (৪২), আব্দুস ছাত্তার (৬৮), শাহজাহান (৪০), আব্দুল কুদ্দুস (৫৮), রফিকুল ইসলাম (৭২), জইনুদ্দিন (৬১), আজিজ (৩৮), খইদ্দর আলী (৬৫)। পাশাপাশি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে বুড়িরহাট বাজার, ফসলি জমি, বুড়িরহাট জামে মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকশত পরিবার।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে তিস্তার তীব্র ¯্রােতে বুড়িরহাট ক্রসবাঁধের একাংশ ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে পরদিন শনিবার আমরা পুরোদমে ধসে যাওয়া অংশে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলাম। কিন্তু প্রবল স্রোতে সেটি গত সন্ধ্যায় বিলিন হয়ে গেছে। পাশাপাশি বিদ্যানন্দ ইউপির কালির মেলা এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেছি এবং নদীগর্ভে বিলিন হওয়া পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো খাবার পৌঁছানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।