রাজারহাটে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি॥ রেল যোগাযোগ বন্ধ,২টি লাশ উদ্ধার
মোঃ রফিকুল ইসলাম,বিশেষ প্রতিনিধিঃ ১৪ আগষ্ট ১৭
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে আরো বেশকিছু নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিস্তা-রমনা রেল লাইনের ব্রীজের পিলার ভেঙ্গে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম যাত্রী দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে রাজারহাট উপজেলার সীমান্তবর্তী টগরাইহাট নামক স্থানে রেলব্রীজটি পানির প্রবল ¯্রােতে যেকোন মুহুর্তে ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ছিনাই এলাকায় মহাসড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়া বন্ধ হলেও আটকে থাকা পানির কারণে বানভাসী মানুষের চরম দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ১৪ আগষ্ট দুপুরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ছিনাই এলাকা থেকে আরো অজ্ঞাত ২টি লাশ উদ্ধার করেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বানভাসী মানুষের খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ,বিদ্যানন্দ ও নাজিমখান ইউনিয়নের খিতাব খাঁ, চর খিতাব খাঁ, গতিয়াসাম, রামহরি, মনশ^র, রতি, চতুরা, পাড়ামৌলা, মানাবাড়ী, তৈয়ব খাঁ, সোমনারায়ন,রাজারহাটের হরিশ^র তালুক, দুধখাওয়া, ইটাকুড়ির দোলাসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে রোপা আমন, সবজি মৎস্যখামার তলিয়ে গেছে।গো খাদ্যের সংকট দেখা দেয়ায় সোমবার রাজারহাট উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ ছিনাই ইউনিয়নের পানিবন্দী এলাকায় গবাদী পশুর জন্য গো- খাদ্য বিতরন করেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বানভাসী পরিবার গুলোর মাঝে খাবার বিতরন করেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আবুনুর মোঃ আক্তারুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আব্দুস ছালাম, ছিনাই ইউপির সাবেক চেযারম্যান মোঃ সাদেকুল হক নুরু বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলু প্রমূখ। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পানিবন্দী পরিবার গুলো যতক্ষণ তাদের বাড়ীতে যেতে পারবে না ততক্ষণ পর্যন্ত ত্রান তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
১৪ আগষ্ট সোমবার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ময়নুল হক জানান, বন্যাকবলিত পানি বন্দী ২০ হাজার পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল, শুকনা চিড়া-গুড়-মুড়ি-চিনি ও খিচুরী বিতরন করা হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ১লাখ ৯০হাজার নগদ টাকা ও ৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া বন্যা কবলিতদের জন্য আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ত্রান অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এব্যাপারে ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুজ্জামান হক বুলু জানান, বন্যাদূর্গতদের দূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, দুপুর ২ ঘটিকায় কুড়িগ্রাম ধরলা পয়েন্টে ২৭.৭২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে এবং তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্ট ২৯.০৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নীচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।