একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা!!!!
মোঃ শফিকুল ইসলাম।
মোঃ রফিকুল ইসলাম ২৩ বছরের যুবক, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কালুয়ারচর গ্রামে মা-বাবা,চাচা-চাচী,দাদী সহ বসবাস করে।গত ১২ই আগষ্ট ঘুম ভাঙ্গে চারিদিকে চেচামেচির কারনে, চোখ খুলেই দেখে বাড়ীর চারিদিকে পানি।কিছু বোঝার আগেই সব কিছু তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিছে।বাবা চাচাতো ছোট দুই ভাই -বোনকে নিয়ে উচু জায়গার সন্ধানে ছুটে,চাচা তখন বাড়ির বাইরে।চাচী,মা,ছোট ভাই সহ রফিকুল রওনা দেয় বাজারের উচু জায়গায়,কিছুদুর যেতেই রাস্তা ভেঙে তীব্র স্রোত সব কিছু ভেসে নিয়ে যাচ্ছে,রফিকুল প্রানপন চেষ্টা করে সবাইকে রক্ষা করার।বাবা একটু আগে পার হওয়ায় চাচাতো ভাই-বোন বেঁচে যায় কিন্তু রফিকুল ছোট ভাই, মা ও দাদী সহ তিব্র স্রোতে আটকে পড়ে,চাচী বাবা বাঁচাও বলে চোখের পলকে ভেসে যায়।রফিকুল ৮০ বছরের অধিক বৃদ্ধা দাদী ও মাকে বুকে নিয়ে কাঁটায় ভরা শিমুল গাছ জড়িয়ে ধরে,শিমুল গাছের কাটায় সবার শরীর ছিড়ে যায় তবু কেউ কাউকে ছাড়েনা।ছোট ভাই বিপুল একগাছ ধরে তো সে গাছও উপড়ে পড়ে এ ভাবে অনেক চেষ্টা করার পর সে একটা বড় গাছের সন্ধান পায় তার পর কিনারে ওঠে কিন্তু রফিকুল আর কিনারে ওঠতে পারে না,এরি মধ্য দাদী বলে পায়ের নিচে আর মাটি নেই,মাও বলে বাবা মাটি নেই শুধু শেখড়,রফিকুল উপায়হীন হয়ে মা ও দাদীর সমস্ত কাপড় খুলে দিয়ে মাকে বলে মা আমি দাদীকে বাঁচালাম তোমরা যে ভাবে পারো বাঁচো,এরি মধ্য শিমুল গাছও উপড়ে প্রচন্ড স্রোতে চলতে থাকে।দাদীকে বুকে নিয়ে তিব্র স্রোতে শিমুল গাছ জড়িয়ে রফিকুল ভেসে যায় প্রায় ১ কিলোমিটার।এর পর তারা চতুর্ভুজ গ্রামে বাঁশঝাড়ে আটকে পড়ে এবং সারা শরীরে শিমুলের কাটায় ক্ষত-বিক্ষত ভাবে লোকজন তাদের উদ্ধার করে।দাদী হাত সহ সারা শরীরে আজো শিমুলের কাটায় ছিড়ে যাওয়া কাঁচা মাংশের ঘা নিয়ে যন্ত্রনাদায়ক ভাবে বেঁচে আছে। মা আধা কিলো ভেসে গিয়ে উচু জায়গার সন্ধান পায়।রফিকুল মা-বাবা,চাচা,ছোট ভাই,চাচাতো ভাই-বোনকে খুজে পেলেও চাচীকে আর জীবিত পায়নি।তিনদিন পর মেকলিতে শিমুল গাছ জড়িয়ে ধরা অবস্থায় মৃত্যু চাচীর সন্ধান পায়। চাচাতো চার ভাই-বোনের মধ্য দুই বোনের বিয়ে হয়েছে আর ছোট এই দুই ভাই-বোন সারাক্ষন শুধু মার কথা ভেবে আনমনা হয়ে থাকে।তাদের চোখের সামনে মাকে ভেসে যাওয়ার দৃশ্য হয়তো তাদের বার বার মনে পড়ছে।অসহায় বৃদ্ধা ও ছোট দুটি মাসুম বাচ্ছার দিকে একজন চরম পাষন্ড ব্যক্তিও তাকালে মনের অজান্তেই তার চোখে জল আসবে।
so sad!!