হত্যা না আত্মহত্যা – মোবাইল ফোনই কাল হলো গৃহবধু বাসনার
রফিকুল ইসলাম,
মঙ্গলবার(১৪ নভেম্বর) এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে নাকি সে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে এ নিয়ে এলাকায় নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। দুপুরে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার জানান, উপজেলা নাজিমখান ইউনিয়নের রতিরাম পাঠানপাড়া গ্রামের প্রাণকান্তের কন্যা বাসনা রানী(২১) এর সাথে ৪ বছর পূর্বে একই উপজেলার রাজারহাট সদর ইউপির তালতলা গ্রামের চঞ্চল রায়ের বিয়ে হয়।
ঘটনার ৫/৭দিন পূর্বে এলাকার সুকুমার নামের এক যুবক বাসনা রানীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের ম্যাসেজ প্রেরণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তার স্বামী সম্প্রতি ওই যুবককে হাজির করে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ৪৫হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। এসময় স্বামী চঞ্চল, ভাসুর উজ¦লসহ পরিবারের লোকজন বাসনা রানীকে ভৎর্সনা করে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এসময় তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। বরং তার উপর আরো নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়।
গত সোমবার রাতে বাসনা রানী বিনা চিকিৎসায় স্বামীর বাড়ীতে মারা যায়। বাড়ীর লোকজন বাসনা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে চিৎকার দিলে এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে লাশ দেখতে পায়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাতেই লাশ পুড়ে ফেলার সিন্ধান্ত নেয় স্বামীসহ স্বামীর বাড়ীর লোকজন। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় এলাকার বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, নির্যাতন করেই বাসনাকে হত্যা করা হতে পারে। লাশের শরীরে বিভিন্ন স্থানে মারপিটের দাগ রয়েছে। বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে সারারাত বাসনা রানীর বাবার বাড়ীর লোকজনের সাথে দফায় দফায় বৈঠক হলেও লাশ দাহ করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার অবশেষে রাজারহাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী চঞ্চলসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেসুর রহমান জানান, বাসনার ভাইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।