খোদা বন্দনা – শাহাজাদা বসুনিয়া

খোদা বন্দনা – শাহাজাদা বসুনিয়া

Rajarhatbd.com

ডাকলেও সে উঠে না, শুধু ইশারা করে
আমি ছুটি তাঁর পানে
সে তিস্তার জল, কুলকুল বহে
আমি স্রোতে ভাসি, ভেসে যাই পানির দেহে
এভাবে ভাসায় আমাকে নদীর জলে সহস্রকাল।

চোখ জুড়ে তার ঘুম
সে থাকে গভীর ঘুমে, ঘুমায় মাটির দেহে।
অপেক্ষা করি আমি দ্রোহে
ডাকলেও সে উঠে আসে না
চিরকাল সে নিদ্রাতুর ঘুমিয়ে থাকে।

সে জেগে উঠে না
ঘুমিয়ে থাকে শিশির ভেজা রাতে
আমি ছুঁই শিশির বিন্দু অতি যতনে
গড়িয়ে পড়ে শিশির জল মাটির দেহে
আমি হাসি হোহো হিহি করে
হণ্য হয়ে খুঁজি তাঁকে পদ্ম শিশিরে
শিশির বিন্দু গড়িয়ে পড়ে দিঘীর জলে।

সে নাকি সূর্য সারথী
উজ্জ্বল চমকে সূর্যআলোয় বেড়ে ওঠে
সূর্য আলোয় জেগে থাকে
বিস্ময়ে তাকাই, দেখি সূবর্ণ ফুল
সে ফুল হয়ে ফুঁটে থাকে চিরকাল
ফুলের গন্ধ শুকি, গন্ধে ভরে থাকে মন।

ঘুমে বিনীত কাতর
শুনি শুধু নাকের ডাক শঙ্কের মতন
শব্দরা খেলা করে কানের ভেতর
সে ছন্দের ছন্দে আলোকিত সেকাল
শব্দ হয়ে বাজে অনাদিকাল।

সে কালবৈশাখী ঝড়, সে শক্তি দৈব
ঝড় তোলে বেসামাল রাতে, রাত-বিরাতে।
গায়ে লাগে ক্রুদ্ধ ঝড়
ঝড়ের বেদনা-বিলাপে রেখে যায়
তাঁর তান্ডব অস্পষ্ট পথরেখায়।

নিরব-নির্জনে থাকে, খুঁজি আমি তাঁরে
সে উড়ে ডালে-আবডালে,
ডালে বসে থাকে
উড়ে চলে পাখি স্বর্গের পানে
অদ্ভুত পাখিরা কিচিরমিচির করে,
আমি খুঁজি তাঁকে পাখির ভেতর
পাখিরা উড়ে উড়ে চলে মেঘহীন আকাশে।

ডাকলেও শুনে না-শুনি শুধু তাঁর হুংকার
সে নাকি সমুদ্রজল
তার দেহের ওপর ভাসে নৌকাযান
জ্বীন-পরীরা বাস করে তাঁর দেহের ভেতর,
রহস্যাবৃত দেহে খুঁজি তাঁকে বারবার।

ডাকলেও শুনে না-শুধু নিরবে রহে
আমি ডাকি, মায়াবিনী ঘুমায় এভাবে চিরকাল
আমি কাঁদি-সে থাকে ঘুমের ভানে
আমি খুঁজি তাঁকে বৃহৎ ও ক্ষুদ্র রহস্যে
খুঁজি আমি তাঁকে আকাশে-বাতাসে,
বাতাসের রহস্যে আমি শ্বাস-প্রশ্বাস নেই
খুঁজি তাঁকে স্বর্গ-মর্ত্যে
সে ঘুমায় শুধু আলোকবর্ষে।
১০
সে থাকে চিরকাল প্রেমময়, সে থাকে চিরকাল তন্ময়
আমি খুঁজি তাঁকে আকাশনীলে
সে ঘুমায় চিরকাল জেগে জেগে
সে হাসে, সেই হাসিতে ঈশ্বর থাকে
খোদা সবখানে, খোদা থাকে সবদিকে
থাকে শুধু খোদার অমিয় বাণী মন্ত্রে-তন্ত্রে।