রাজারহাটে ১০ মাস পর শিশু হত্যা মামলার মোটিভ উদ্ঘাটন

রাজারহাটে ১০ মাস পর শিশু হত্যা মামলার মোটিভ উদ্ঘাটন

পরকীয়ায় জড়িত দেবর-ভাবী গ্রেপ্তার
রফিকুল ইসলাম:
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দেবর-ভাবীর পরকীয়া দেখে ফেলায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমি মালি (৮) নামের এক শিশুকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার ঘটনায় ১০ মাস পর থানা পুলিশ ভিসেরা রিপোর্টের সূত্র ধরে শনিবার রাতে হত্যার সঙ্গে জড়িত দেবর মিজানুর রহমান (২০) ও ভাবী শাম্মী আক্তার (২৫) কে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানায়, উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপির খিতাবখাঁ এলাকার দুধকুমার মালির কন্যা সুমি (৮) গত ১৫-১১-২০১৭ ইং হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার পর ওই রাতে পাশ্ববর্তী পুকুর থেকে সুমির লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় পরদিন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করে। দীর্ঘদিন পর ভিসেরা রিপোর্টে পুলিশ জানতে পায় শিশুটিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে থানা পুলিশ গত ২৬-০৯-২০১৮ ইং রাজারহাট থানায় অজ্ঞাত নামীয় আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৯।

রাজারহাট থানার নবাগত ওসি কৃষ্ণ কুমার সরকার যোগদানের পর মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে প্রবাসীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের সঙ্গে তার দেবর মিজানুর রহমানের পরকীয়ার বিষয়টি উঠে আসে। এরই সূত্র ধরে ২৯-০৯-২০১৮ ইং শনিবার রাতে ওসির নির্দেশে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহুরুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে মিজানুর রহমানকে থানায় নিয়ে আসে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই রাতেই সৌদি প্রবাসী আব্দুস সামাদ প্রামানিকের স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে থানায় নিয়ে আসে। উলে­খ্য, প্রবাসী আব্দুস সামাদ দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী শাম্মীকে বাড়িতে রেখে তিনি সৌদি আরবে কর্মরত আছেন।

প্রবাসীর স্ত্রীর সন্তান না থাকায় পার্শ্ববর্তী বাড়ির দুধকুমর মালির দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া কন্যা সুমি মালিকে নিজের সন্তান মনে করে ভরণ-পোষণসহ দেখা শুনা করে আসছিল। এরই মাঝে একদিন ঘরের মধ্যে প্রবাসীর ছোট ভাই মিজানুর রহমান ও প্রবাসীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে সুমি। এটিই সুমির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভবিষ্যত সে ঝামেলা করবে, এ মর্মে ওইদিন দু’জনই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিশু সুমিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী পুকুরে লাশ ফেলে দেয়।

এ বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ কৃষ্ণ কুমার সরকার বলেন, যোগদানের পর থেকেই এই হত্যা মামলাটির মোটিভ উদ্ঘাটনে মাঠে তৎপরতা শুরু করি এবং হত্যার মোটিভ উদ্ঘাটনে সফল হই।রবিবার আসামীদ্বয়কে আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।