ইলিশ প্রজনন মৌসুমে কুড়িগ্রামের জেলেরা এবার খাদ্যশস্য পাচ্ছেন

ইলিশ প্রজনন মৌসুমে কুড়িগ্রামের জেলেরা এবার খাদ্যশস্য পাচ্ছেন

এজি লাভলু:

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে কুড়িগ্রামের জেলেদের জন্য প্রথমবারের মতো খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) কালিপদ রায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়কে এবছর ইলিশের প্রধান প্রজনন সময় ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় দেশের ইলিশ জোনভুক্ত জেলাগুলোতে ইলিশ শিকার, বিক্রি ও বিপণন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

আগামী ৯ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সচেতন করতে আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত জেলার ইলিশ জোনভুক্ত উপজেলাগুলোর হাটবাজারে সচেতনতামূলক মাইকিং করার ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়। এছাড়া, ৯-৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সব নদ-নদীতে মৎস্য ধরা নিষিদ্ধসহ হাট-বাজারে ইলিশ বেচাকেনা ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ডিএফও কালিপদ রায় জানান, ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে আওতাভুক্ত প্রতিটি উপজেলার জেলে পল্লীতে সচেতনতামূলক সভার আয়োজনসহ নদ-নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া, হাট-বাজারগুলোতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।

মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার মোট ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলাকে (কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, নাগেশ্বরী, চিলমারী,রৌমারী ও রাজীবপুর) ইলিশ জোনের আওতায় আনা হয়েছে। ইলিশ জোনভুক্ত ওই ৬ উপজেলার মোট ৭ হাজার ৯৩৫ তালিকাভুক্ত ইলিশ জেলে থাকলেও খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ৭৬১ জনকে। এরা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ ২২ দিনের জন্য ২০ কেজি করে চাল পাবেন।

জনবল ও নৌযান সংকটে অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন আশঙ্কা করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদের প্রায় ১৪৯ কিলোমিটার নৌপথ জুড়ে ইলিশ মাছের বিচরণ ক্ষেত্র। ইলিশ জোনভুক্ত ছয় উপজেলার তিনটি উপজেলায় মৎস্য কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। নদ-নদীতে অভিযান পরিচালনা করার জন্য আমাদের নিজস্ব কোনও নৌযান নেই। অভিযান পরিচালনার জন্য এখনও কোনও বরাদ্দও পাওয়া যায়নি। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।’

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, ‘তালিকাভুক্ত যেসব জেলের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে তাদেরকে তা যথাসময়ে বণ্টন করা হবে। এরপরও তালিকাভুক্ত এমনকি তালিকার বাইরে কোনও জেলে যদি বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য হন, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তাদেরকেও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত আছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে কুড়িগ্রাম জেলাকে ইলিশ জোনভুক্ত এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত দুই বছর ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে এলাকার তালিকাভুক্ত ইলিশ জেলেদের কোনও রকম খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়নি। এবারই প্রথম তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে সরকার।