রাজারহাটে প্রাচীন শ্বেত কূপকে ঘিরে পূজা ও মানত!

রাজারহাটে প্রাচীন শ্বেত কূপকে ঘিরে পূজা ও মানত!

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ২০০ বছর পূর্বের একটি শ্বেত কূপের সন্ধান পেয়েছে এলাকাবাসী। এই প্রাচীনতম কূপটিকে ঘিরে সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীরা পূজার্চনা শুরু করেছে।

এ খবর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পরায় দূর-দুরান্ত থেকে শত শত দর্শনার্থী এই কূপটিকে একনজর দেখতে ভিড় করছে। দর্শনার্থীরা বিভিন্ন রোগমুক্তির আশায় কূপের পানি সংগ্রহ করে বিভিন্ন মানত করছে।

এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের বানেশ্বর নীলকণ্ঠ গ্রামের শীতলীর পাঠ দুর্গা মন্দিরের সীমানা বাঁশ দিয়ে ঘেরাওয়ের সময় গত ৩ নভেম্বর সকালে গোবিন্দ চন্দ্র রায় (৫৫) নামের এক মজুর সাবল দিয়ে মাটি খুঁড়তে গিয়ে ২০০ বছর পূর্বের একটি কূপের সন্ধান পান।

এরপর কয়েকজনের সহযোগিতায় আরও ৩ ফুট মাটি খোঁড়ার পর একটি সুড়ঙ্গ দেখতে পান। ৩ ফুট পর সেখানে মাটির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এই কুপটির সুড়ঙ্গে ১৫ ফুট গভীরের মধ্যে একবারে স্বচ্ছ পানি বেরিয়ে আসে। নিচ থেকে পানির উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট। কিন্তু যতই পানি উত্তোলন করা হোক না কেন ওই কূপের পানি শেষ হচ্ছে না। বরং সমানভাবে থাকে।

এলাকাবাসী এবং মন্দির কমিটির লোকজন ওই কূপটিকে লালসালু কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখেন। এরপর ৩ ফুট পর্যন্ত রিং সিমেন্ট দিয়ে উঁচু করে মুখে ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করা হয়। তারপর থেকে এলাকার কৃষ্ণ চরণ (৭০) নামের এক পূজারী কূপটিকে সাজিয়ে চারপাশে গঙ্গা ও কৃষ্ণ পূজা শুরু করেন।

এ খবর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দূর-দুরান্ত থেকে দর্শনার্থী কূপটি দেখতে ছুটে আসেন। অনেকে রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে মানত করে ওই কূপের পানি সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন।

ওই এলাকার মনোরত সরকার (৯২) বলেন, আমার বয়স যখন ১২ বছর তখন থেকে এই শীতলীরপাঠ মন্দিরে পূজার্চনা দেখে আসছিলাম। কিন্তু এই কূপটি দেখতে পাইনি।

মঙ্গলবার মন্দির কমিটির সভাপতি স্বপন ব্রজবাসী (৪৮) বলেন, শীতলীরপাঠ মন্দিরটির বয়স সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেন না। আনুমানিক দুইশ’ বছরের অধিক হতে পারে। হয়তো ওই সময় মন্দিরের পূজা করার জন্য কূপটি খনন করা হয়েছিল। কালের বিবর্তনে তা মাটিচাপা পড়ে যায়। সেটিরই আবার সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে অলৌকিক বিষয় হল কূপটি ৩ ফুট খননের পর সুড়ঙ্গের ১৫ ফুট গভীরের মধ্যে একেবারে স্বচ্ছ-পরিষ্কার পানি দেখতে পাওয়া যায়।

অলৌকিক ঘটনাটির কারণে এখানে কূপটিকে ঘিরে পূজা করা হচ্ছে। গত ১৫ দিনের মধ্যে সোমবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পূজার্চনা চলার সময় সাড়ে ৩ হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীর মাঝে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে।

রাজারহাট থানার ওসি কৃষ্ণ কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি।

সূত্র:  jugantor