রাজারহাটে সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে আবাসনকেন্দ্র

রাজারহাটে সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে আবাসনকেন্দ্র

।। রফিকুল ইসলাম।।

রাজারহাটে ভূমিহীন ও হতদরিদ্র পরিবারের আশ্রয়ের জন্য সরকারের দেয়া আবাসন কেন্দ্রগুলো এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ আবাসন কেন্দ্রগুলোর টিনের চাল আর ঘরের বেড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে ওইসব আবাসনের খেটে খাওয়া মানুষগুলো ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে যুদ্ধ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরজমিন জানা যায়, ২০০৭ সালে রাজারহাট উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ৩২০টি গৃহহীন ও হতদরিদ্র পরিবারের আশ্রয়ের জন্য আবাসন তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ছিনাই ইউনিয়নের জয়কুমর আবাসনে ২০০ পরিবার, রাজারহাট সদর ইউনিয়নের দুর্গারাম আবাসনে ১০০ পরিবার ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে পাঁচবাড়ী আবাসনে ২০টি পরিবারের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে দীর্ঘ ১৩ বছরেও ঘরগুলোর সংস্কার না হওয়ায় সম্পূর্ণ জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। আবাসন তৈরি করার সময় নলকূপের ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। নিজেদের প্রচেষ্টায় নলকূপ বসিয়ে ব্যবহার করছে সেখানকার বাসিন্দারা।

জয়কুমর আবাসনের বাসিন্দা ফাতেমা বেওয়া (৬০) বলেন, অনেকদিন থেকে ঘরের চাল ফুটো হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির সময় পানি পড়ে। মোর কষ্ট দেখিয়া কাঁঠালবাড়ির একনা ছাওয়া নিজের টাকা দিয়ে মোর ঘরে টিন কয়খান পাল্টে দিছে। ওই আবাসনের সভাপতি নুরুজ্জামান জানান, একাধিকবার অনেক সাংবাদিক পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করেছিল এবং উপজেলা থেকে অনেক অফিসার এসেও সমস্যাগুলো লিখে নিয়ে গেলেও আজ অবধি সংস্কার না হওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে ব্যারাক ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছেন।

বর্তমানে ২০০ পরিবারের মধ্যে ১০০টি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে দুর্গারাম আবাসনের অমিদা বেওয়া (৫০), হাসমত আলী (৬০) জানান, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। ভালো নেই স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পরিবার নিয়ে খোলা জায়গায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। ঘড়িয়ালডাঙ্গা পাঁচবাড়ি আবাসনের জরিনা বেগম (৫৫) জানান, নিজস্ব মাটি বলতে কিছু নেই। ১৩ বছর আগে ঘরটা পাইছিলাম। এতোদিনে সংস্কার না হওয়ায় ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে ছেলে-মেয়ের পড়ার বই খাতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে এনজিওতে লোন করে কোনোরকম ঘরের চালের টিনগুলো পাল্টিয়েছি।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, ১৯৯৫ থেকে ২০০২ খ্রি: পর্যন্ত নির্মিত আবাসনগুলোর অবস্থা সম্পর্কে আমার নিকট তথ্য চাওয়া হয়েছিল। আমি রাজারহাট উপজেলার ওই সময়ের ৪টি আবাসনের অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *