রাজারহাটে তিস্তায় ধসে গেল ক্রসবাঁধের ৩০ মিটার

রাজারহাটে  তিস্তায় ধসে গেল ক্রসবাঁধের ৩০ মিটার

।।রফিকুল ইসলাম।।

রাজারহাটে সদ্য ভাঙ্গনরোধে সংস্কারকৃত ক্রস বাঁধের ৩০ মিটার শনিবার রাতে ধ্বসে গেল তিস্তায়।

ভাঙ্গন আতংকে রয়েছে বুড়িরহাট বাজার, ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপির ১০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার, শতশত একর ফসলি জমি, মসজিদ-মন্দিরসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

রবিবার রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম ও কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম ধ্বসে যাওয়া ক্রসবাঁধটি পরিদর্শন করেছেন।

৩০ মে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮.৫ মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সরেজমিনে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট বাজার সংলগ্ন ক্রসবাঁধটি ২০০০ সালে নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ১০ টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পায়। ক্রসবাঁধটি নির্মাণের পর থেকে কয়েক দফায় সংস্কার করা হলে প্রতি বছর বর্ষা এলেই বাঁধটির বিভিন্ন স্থান ধ্বসে যায় এবং ওই সময় কুড়িগ্রাম পাউবোর তখন নজরে আসে। কোনরকম জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার কাজ করে বর্ষা মওসুম পার করে। এ বছর আগাম ক্রসবাঁধটির সংস্কার কাজ জরুরী ফান্ড থেকে শুরু করেন কুড়িগ্রাম পাউবো কতৃপক্ষ।

সম্প্রতি ক্রসবাঁধটির সংস্কার কাজ শেষ করা হলেও ভরা বর্ষা মওসুমের পূর্বেই শনিবার রাত ১০ টার দিকে হঠাৎ ১৫০ মিটার ক্রসবাঁধটির ৩০ মিটার তিস্তার গর্ভে ধ্বসে গেছে। বাঁধটি ধ্বসে যাওয়ার পর থেকে তিস্তার তীরবর্তী ১০ গ্রামের মানুষজনের বর্তমান নির্ঘুম রাত কাটছে। বর্তমান ধ্বসে যাওয়া অংশে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পাউবোর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন বলেন, ক্রসবাঁধ হবে না মুলতঃ স্পারের কিছু অংশ পানির প্রচন্ড চাপে ধ্বসে গেছে। এটা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ভারতে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হওয়ায় গজল ডোবায় অতিরিক্ত পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দেয়ায় পানির চাপটি বেড়ে গেছে। আমাদের সংস্কার কাজটি এখনও চলমান রয়েছে। আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিস্তা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারের মেগা প্রকল্প হাতে রয়েছে, এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড আপাতঃ কোনো ধরনের স্থায়ী প্রকল্প গ্রহন করছেন না। অস্থায়ীভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার কাজ চালাচ্ছে। পানির চাপ বেড়ে গেলে বাঁধটির উপর চাপ পড়বে। কোনভাবে ক্রসবাঁধটি ভেঙ্গে গেলে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের মানুষ তাদের বসতভিটা নিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *