বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার শাহীন আলমকে কুড়িগ্রামবাসীর সংর্বধনা

বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার শাহীন আলমকে কুড়িগ্রামবাসীর সংর্বধনা

|| নিউজ ডেস্ক ||
অনুর্ধ -১৯ বিশ্বকাপ ২০২০ জয়ী দলের সদস্য শাহীন আলমকে তার নিজ জেলা কুড়িগ্রামের ক্রীড়ামোদী মানুষ সংর্বধনা দিয়েছে। শুক্রবার সকালে শাহীন আলম ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম শহরে এসে পৌছালে তাকে নিয়ে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রটি সারা শহর প্রদক্ষিন করে। পরে কলেজ মোড়স্থ বিজয় স্তম্ভে শহীদদের স্মরণ পুষ্পস্তবক অর্পন করেন শাহীন আলম।

এ সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থা সহ জেলার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে মটর সাইকেল শোভাযাত্রা সহ তার বাড়ী উলিপুর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা পাইক পাড়া  গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় গ্রামবাসীরা  তাকে একনজর দেখতে চলে আসে।

জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা পাইকপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহাদত হোসেনের পূত্র শাহীন আলম। তিন ভাইবোনের মধ্যে শাহীন আলম ছোট। তার দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা সাতিনা বেগম একজন গৃহিনী। মাত্র দুই শতক জমির উপর তাদের বাড়ি। এছাড়া আর কিছুই নেই।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড’র (বিসিবি) কুড়িগ্রাম জেলার সহকারি কোচ বিজন কুমার দাস জানান, শাহীন আলমের উত্থান ২০১৬ সালে। এসময় জেলা অনূর্ধ-১৬ টিমের জন্য তাকে প্রথম নির্বাচন করা হয়। এর আগে সে গ্রামেগঞ্জে টেপ টেনিস দিয়ে খেলাধূলা করতো। স্থানীয় কুড়িগ্রাম ক্রিকেট একাডেমির কোচ মনোজ কুমার দাস ময়না ক্রিকেটে তাকে প্রথম হাতেখড়ি দেয়। এরপর ২০১৭ সালে বিকেএসপি’র হান্টিং দলের ক্রিকেট কোচ রুশো তাকে বিকেএসপিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। সেখান থেকেই তার উত্থান। দীর্ঘদেহীর কারণে স্ট্রাইক বোলার হিসেবে সে শ্রীলংকা ও নিউল্যান্ডে জাতীয় দলের বয়সভিত্তিক গ্রুপের হয়ে সফর করে। সর্বশেষ অনূর্ধ-১৯ যুব বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয়।

শাহীন আলমের দিনমজুর বাবা শাহাদত হোসেন ও মা সাতিনা বেগম ছেলের এই সাফল্যে দারুন খুশী। তারা জানান, সেদিনের খেলাটি তারা দেখেছেন।অভাবের কারণে ছেলেকে তেমন একটা সহযোগিতা করতে পারেননি বলে তারা দু:খ প্রকাশ করেন।

ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক ফিরোজ আহমেদ বলেন,ছেলেটি অভাবের কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে এসে প্রাকটিস করত। তাকে তার লক্ষে পৌছানোর জন্য সব রকম সহায়তা করেছি। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন ও যেন ভাল কিছু করতে পারে। শাহীনের জন্য কুড়িগ্রাম বাসী গর্বিত।

কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান জানান, ছেলেটি অভাবের কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিয়ে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে এসে প্রাকটিস করত। তাকে সবাই সহযোগিতা করেছে। তার যুব বিশ্বকাপ জয়ে কুড়িগ্রামবাসী গর্বিত।

শাহীন আলম জানায় বিশ্বকাপ জয়ে দেশের সম্মান বয়ে আনায় আমি গর্বিত । আগামী দুই বছর বিসিবি-২১ নতুন প্রকল্পের সাথ চুক্তি করেছি। সেখানে আরও ভাল করার চেষ্টা করবো। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছ থেকে আগামী ১৯ তারিখে গণভবনে যে সংর্বধনা দেয়া হবে এটা কোনদিন  ভাবিনি। এত কম বয়সে এত সম্মান পাব। তার কাছে সম্মান পাওয়া জীবনে একটি বড় অর্জন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।


সূত্র: আজকের কুড়িগ্রাম