একটি হত্যাকান্ডে গন্তব্যহীন রাজনীতিঃ

একটি হত্যাকান্ডে গন্তব্যহীন রাজনীতিঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম,রাজারহাট। আগষ্ট ১৪,২০১৭
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদত বার্ষিকী। একটা স্বাধীন দেশের স্থপতিকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীরা যে বিষবৃক্ষ স্বাধীন দেশে রোপন করেছে তার মধ্য থেকে আজও আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি।দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফলাফল এ হত্যাকান্ড হলেও এর গভীরে ব্যাপক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য লুকায়িত ছিল।আর পরবর্তিতে সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গুলো স্বাধীনতা বিরোধীরা একে একে পুরন করেছে আর আমাদের জাতিসত্বার মধ্য বিভেদ তৈরী হয়েছে,ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্ধ হয়েছে,এক দলের সাথে আরেক দলের নির্মুল করে দেয়ার ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পেয়েছে,৭১এর নরপাষন্ডরা আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে ৩০ লাখ শহীদের আত্তা,২ লক্ষ মা -বোনের সম্ভ্রম বাঁচানোর আকুতি কে কষ্ট দিয়েছে।
রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে জানি রাজনীতিতে এন্টাগনেষ্টিক দ্বন্দ্ব ভয়াবহ দ্বন্দ্ব, কারন এ দ্বন্দ্বে এক শক্তির উত্থানে আরেক শক্তির পরাজয় হয়।১৯৭১ সালে এই দ্বন্দ্বে পাকিস্তান রাষ্ট্র ভূমিসাৎ ভাবে পতিত হয় এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উত্থান হয়।এই পতিত শক্তি ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট আরেক দ্বন্দে মিলিত হয় এবং ইতিহাসের নির্মম হত্যাকান্ড সংগঠিত করে।এখানে ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা আর সপরিবারে বিনাশ করার মধ্যও এই এন্টাগণেষ্টিক দ্বন্ধ কাজ করেছে, কম্বোডিয়ার গনহত্যায় পলপটরা তাদের শত্রুদের পেটের বাচ্চা সহ হত্যা করেছে কারন পলপটদের ধারনা ছিল এই পেটের বাচ্চাও একদিন পলপটের মতাদর্শ বিরোধী হবে।তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেহেতু স্বাধীনতার মূর্ত প্রতিক তাই তাকে হত্যা করেছে এবং পুরো পরিবার নির্বংশ করে দিতে চেয়েছে,বিদেশে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বোন সহ থাকায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে।এর পর ঐ যে ৭১ এর পরাজিত শক্তি আবারো স্বরুপে আত্বপ্রকাশ করলো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মুল খুটি ৪টি মুলনীতিকে ধূর্ততার ব্লেটে ক্ষত-বিক্ষত করা হলো,সমস্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের দেশে এনে পুর্নবাসিত করা হলো,শাহ আজিজ কে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে রক্তাক্ত করা হলো।পরবর্তীতে ধর্মীয় রাজনীতির প্রচলন,আমলা ও ব্যবসায়ী রাজনীতি করন,রাজাকারের গাড়ীতে জাতিয় পতাকা উড্ডিন,রাষ্ট্রীয় সংকটকে আরো গভীর করেছে।এই সংকট আরো গভীর হয়েছে ২১শে আগষ্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা,এখানেও ঐ এন্টাগণেষ্টিক দ্বন্ধ কাজ করেছে,সেদিন তারা বিরোধী দলের নেত্রির সাথে পুরো দলকে নিশ্চিহৃ করতে চেয়েছে,ফলে পরবর্তী সমঝোতার পথ শুধু কন্টকময় হয়নি বরং আরো বেশী অবরুদ্ধ হয়েছে। আজ অনেকেই যে বলে দুই নেত্রি সংলাপে বসলেই একটা ফলাফল বের হবে তারা আসলে রাজনীতি জ্ঞানে অপরিপক্ক মনে হয় আমার কাছে,দুই নেত্রি তো আলোচনা করতে গেছিলো টেলিফোনে,আলোচনার বিষয় কি হয়েছিল?১৫ই আগষ্ট ও ২১শে অাগষ্ট,কেন হলো? কারন হৃদয়ে ক্ষত ও ক্ষোভ আছে,প্রিয়জন হারানোর বেদনা আছে,প্রতিশোধের স্পৃহা আছে।ফলে এ দেশে রাজনীতির সমঝোতা তখনই সম্ভব যখন ১৫ই আগষ্ট ও ২১ শে আগষ্ট নিয়ে খোলা মেলা আলোচনায় জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে।আর তা না হলে কিছু রেখে কিছু ছেড়ে মিল মহব্বত রেখে একটা জায়গায় পৌছানো যাবে কিন্তু চিরস্থায়ী যে দ্বন্দ্ব “এন্টাগণেষ্টিক”তার ফয়সালা কখনই হবেনা,
তাই ১৫ই অাগষ্ট শুধু নিমর্ম হত্যাকান্ডই নয় এ জাতির বুকে একটি চিরস্থায়ী দ্বন্দের গাছ রোপন করেছে তার ফয়সালা অনিশ্চিত। ফলে অনিশ্চিয়তার চোরাবালিতে ষড়যন্ত্র আর পেশীশক্তির গভীরে চলছে দেশের রাজনীতি।

2 thoughts on “একটি হত্যাকান্ডে গন্তব্যহীন রাজনীতিঃ

  1. আমাদের আরও তৎপর হওয়া দরকার

  2. ১৫ই আগস্ট বাঙ্গালি জাতির জীবনে একটি কালো দিন। কিন্তু তার রাজনীতিতেও যে ভুল ছিল, তা তিনি তার জীবন দিয়ে প্রমান করে গেছেন। ১৫ই আগস্টকে স্বরণ করার জন্য চলে ভুড়িভোজের আয়োজন, করে শিয়া মাতম, যা আস্তে আস্তে পথ বেঁকে যাচ্ছে। স্বরণ হোক মন থেকে এবং আত্মা থেকে, ভুড়িভোজ কিংবা মাতম করে নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *