কুড়িগ্রামে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বেকারি পণ্য

কুড়িগ্রামে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বেকারি পণ্য

নিউজ ডেস্কঃ
কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার আনাচে-কানাচে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বেকারি পণ্য। নিম্নমানের এসব খাবার খেয়ে মানুষ অসুস্থ হলেও খাবারের গুণগত মান যাচাইয়ের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। তবে গত ১৪ নভেম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিএসটিআই সদরের কাঁঠালবাড়ী বাজারের সুমাইয়া বেকারি ও বাবু বেকারিকে সাত হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

জেলার ৯ উপজেলায় বেকারিগুলোতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, পেটিস, শুকনা শিঙাড়া, শুকনা মিষ্টি, জিলাপি, শুকনা শিম পিঠাসহ ৬০-৬৫ ধরনের খাবার। বেকারিগুলো এ খাবার তৈরির জন্য কাঁচামালের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে বাজারের নিম্নমানের আটা-ময়দা, পাম্প তেল, স্যাকারিন, সুজি, অপরিচ্ছন্ন চিনি, সোডা, ক্ষতিকারক রঞ্জক পদার্থ, চিঁড়া, চকোলেটের গুঁড়া, বিট লবণ ও শুকনা মরিচের গুঁড়া। শুধু জেলা শহর ও উপজেলা শহরের হাতেগোনা কয়েকটি বেকারি মানসম্পন্ন খাদ্যদ্রব্য বাজারজাত করছে। বাকি বেকারি মালিকরা সাদা প্যাকেট অথবা বিভিন্ন নামে বেনামের প্যাকেটে ভরিয়ে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারে ছাড়ছেন।

আবার যেসব বেকারি নিজ নামীয় প্যাকেটে খাবারসামগ্রী প্যাকেটজাত করছে তাদের দু-একজনের বিএসটিআই অনুমোদন শুধু একটি খাদ্যপণ্যের ওপর থাকলেও তারা ৬০-৬৫ ধরনের খাদ্য ওই একই নামীয় প্যাকেটে ভরিয়ে বাজারজাত করছে। তারপর স্থানীয় ভিত্তিতে তৈরি খাবারগুলোর প্যাকেটের গায়ে কাঁচামালের উপাদান ও মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখ দেওয়া থাকে না। এ ভেজাল খাবার খেয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম শহরে ১০টি, কুড়িগ্রাম সদরের আট ইউনিয়নে প্রায় ২৫টি, নাগেশ্বরীতে ২০টি, ভূরুঙ্গামারীতে ১০টি, ফুলবাড়ীতে পাঁচটি, রাজারহাটে ছয়টি, উলিপুরে ১৭টি, চিলমারীতে পাঁচটি, রৌমারীতে চারটি ও রাজিবপুরে দুটি বেকারি চালু রয়েছে। কিছু কিছু বেকারি লোকালয়ে স্থাপিত থাকলেও বেশিরভাগই বেকারি মালিকের বাড়িকেন্দ্রিক। টিনশেড ঘরে কাঁচা মেঝের মধ্যে স্থাপিত কারখানায় চুলা ও চিমনির সঠিক পরিমাপ নেই। কয়েকটি বেকারি গোয়ালঘর ও ময়লা-আবর্জনা ফেলার গর্তের কাছে রয়েছে। বেকারিগুলো বছরে পর বছর ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তৈরি করলেও তাদের নেই কোনো বিএসটিআই অনুমোদন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানেটারি পরিদর্শকরা বেকারি ঘুরে ঘুরে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জোর করিয়ে লাইসেন্স করিয়ে থাকেন। মেয়াদোত্তীর্ণের পরে লাইসেন্সগুলো আর নবায়ন হয় না।

গত ১৪ নভেম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে বিএসটিআই জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এ সময় পণ্যের গুণগত মান যাচাই ছাড়া ও বিএসটিআই’র সিএম লাইসেন্স গ্রহণ না করায় কাঁঠালবাড়ী বাজারের সুমাইয়া বেকারি ও বাবু বেকারিকে সাত হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

অন্যদিকে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনকারী যাত্রাপুরের মসলা হাটিতে অবস্থিত নামবিহীন বেকারির মালিক শহিদুল ইসলাম ও ঘোগাদহ বাজারের ভিতরবন্দ সড়কে অবস্থিত নামবিহীন বেকারির মালিক বাবু মিয়া জানান, তারা কয়েক বছর ধরে বেকারি পরিচালিত করে আসছেন। তাদের বিএসটিআই অনুমোদনসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র নেই। সদর উপজেলা ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার স্যানেটারি পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় বেকারির সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই তার। তবে কয়েকটি হাটবাজারে গেলে বেশ কিছু বেকারি নজরে পড়ে। তাদের শ্রমিকদের রোগাক্রান্ত ও তৈরি খাদ্যদ্রব্যে অনেক ভেজাল লক্ষ করা গেছে।

সুত্রঃ sharebiz
By Ulipur.com on November , 2017 অনিয়ম ও অসংগতি, কুড়িগ্রাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *