রাজারহাটে “দরিদ্র কামারের ছেলের অসাধারণ সাফল্য, কপালে ভাঁজ পড়েছে বাবার। “

রাজারহাটে “দরিদ্র কামারের ছেলের অসাধারণ সাফল্য, কপালে ভাঁজ পড়েছে বাবার। “

Rajarhatbd.com
অাসাদুজ্জামান এইম রতন
সিনিয়র সহ সম্পাদক :

সবাইন কয় মোর বেটা ভালো রেজাল্ট কইরছে, সাববাশি দ্যায়! আর এলা থাকি আরো ভাল করিয়া নেকাপড়া কইরবার কয় সবাইন।

আনন্দ নাকি হতাশা অশ্রু নিয়ে কথা গুলো বলছিলেন সদ্য প্রকাশিত এস এস সি ফলাফলে জিপিএ ৪.৯৪ পাওয়া গোপাল চন্দ্র মোহন্তের পিতা দীনেশ চন্দ্র মোহন্ত।

গোপাল রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এই সাফল্য অর্জন করেন।
রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চাকিরপশার তালুক গ্রামে ৫ শতক জমির উপর গোপালদের বাস। সম্পদ বলতে ঐটুকুই।

গোপালদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ। বাবা- মা, দুই বোন আর গোপাল। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে এইচ এস সি পাশ করে, আর এক বোন পড়ছে। অক্ষরজ্ঞানহীন গোপালের বাবা গতর খেটে শক্ত লোহা পিটিয়ে পড়ায় তাদের। আর এ জন্য হয়তোবা কখনও সাদা ভাত ও খেয়ে দিনাতিপাত করেছে তারা। অবশ্য এতে গোপালের বাবার কোন দু:খ নেই। নিজে পূজায় ভালো পোষাক না পরে চেষ্টা করেছেন গোপালদেরকে দিতে। গোপালও পড়ালেখার ফাঁকে দরিদ্র বাবাকে সহোযোগিতা করে প্রায়ই। যদিও বাবা হিসেবে চান না এই রক্ত পানি করা পেশায় ছেলে আসুক। কিন্তু গোপালের বাবার যে বয়স হচ্ছে। শারীরিক সক্ষমতা কমছে দিন দিন। আগের মতো আর শক্তি পাননা। দুঃখ ও হতাশা নিয়ে বললেন, ছেলেকে ঠিকমত পড়াশোনার খরচ দিতে পারিনি তবুও সে ভালো রেজাল্ট করেছে। আর এখন তো বেশী খরচ লাগবে। কি করে কি হবে ভগবান জানেন।

গোপালের ইচ্ছে সে একজন ডাক্তার হতে চায়।
ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করতে চায়।
কাজ করতে চায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য যাদের লেখাপড়া থমকে যায় দারিদ্র্যের কারণে।

গোপাল কি পারবে এই কন্টকযুক্ত পথ পাড়ি দিয়ে তার অভিষ্ট লক্ষ্যেকে ছুঁয়ে দিতে ?