ঐতিহ্যবাহী কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

ঐতিহ্যবাহী কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

Rajarhatbd.com
আমানুর রহমান খোকন:
১৬টি নদ-নদীবেষ্টিত জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলার অন্যতম নদী ধরলা। এর বিস্তৃতি কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার ৩৭ কিমি এলাকাজুড়ে। নদীর তীর ঘেঁষে জেলা সদরে ১৮৯৬ সালে নির্মাণ করা হয় একটি বালিকা বিদ্যালয়। সে সময়কার কুড়িগ্রাম মহকুমার প্রশাসক রবার্ট ব্রাউনের সহধর্মণী সরলা বালা নারীশিক্ষা উন্নয়নে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রথম উদ্যোগ নেন। তার নামানুসারে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ‘সরলা গার্লস স্কুল’।

প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন পণ্ডিত সতীশ চন্দ্র মুখার্জী। এরপর সরলা গার্লস স্কুলের সঙ্গে ‘এমই’ যুক্ত হয়। ১৯২৮ সালে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি কুড়িগ্রাম গার্লস এমই স্কুল নামে নামকরণ করা হয়। একই বছর ধরলা নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। ফলে স্থানান্তরিত হয় স্কুলটি। একটি বয়েজ হাইস্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত করে মর্নিং শিফটে ক্লাস চালুর মাধ্যমে বালিকা স্কুলের কার্যক্রম চালানো হয় কিছুদিন।
১৯৪৬ সালে কুড়িগ্রাম গার্লস এইচআই স্কুল ও এমআই স্কুল একত্র করে তৎকালীন রংপুরে কনজুমার কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় কুড়িগ্রাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নাম দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে নাম সংশোধন করে কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে নামকরণ করা হয়।

সৃষ্টিলগ্ন হতে বিজ্ঞ পণ্ডিত ও মাস্টাররা এ প্রতিষ্ঠানে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেন। একশ ২১ বছরের খ্যাতি অক্ষুণœ রাখতে সচেষ্ট রয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা হাজেরা বেগম। তিনি এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। পড়ালেখা সম্পন্ন করে দীর্ঘদিন সহকারী শিক্ষক (বিএসসি, বিএড, এমএ) পদে চাকরি করেন। ২০১০ সালে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন প্রায় আড়াই মাস। ওই বছরের শেষদিকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। ইতোমধ্যে কয়েকবার জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪০০। শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৩০ জন (এমপিওভুক্ত ও কমিটি পরিচালিত)। প্রতি বছর সমাপনী, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়। জাতীয়, আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক পর্যায়ের বিভিন্ন দিবসে অংশ নিয়ে থাকে তারা।

তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুটি শাখা একই সঙ্গে পরিচালনা করতে জায়গা সংকটে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গহরপার্ক মসজিদের পুকুরপাড় ঘেঁষে গাইডওয়ালসহ প্রাচীরটি পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন।
প্রধান শিক্ষক হাজেরা বেগম বলেন, সব বাধা অতিক্রম করে কুড়িগ্রামের নারী শিক্ষা উন্নয়নের মডেল এ বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।

সুত্র:শেয়ার বিজ