লাইসেন্স,পরিবেশ সনদ ছাড়াই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হাট

লাইসেন্স,পরিবেশ সনদ ছাড়াই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হাট

নিউজ ডেস্কঃ
উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্রহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হাট। দালাল চক্র হাসপাতালের রোগিদের ভাগিয়ে নিয়ে এক্স-রে টেকনিশিয়ান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই আল্ট্রাসনোগ্রাম করে রোগিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও প্রতারণা সহ হয়রানী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে গরীব রোগিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এসেও সরকারের দেয়া চিকিৎসা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের ৫০ গজের মধ্যে অনুমোদনহীন ও পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ৭টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন করে এক্স-রে টেকনিশিয়ান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ব্যবহার করে হাতুরে টেকনিশিয়ান দিয়ে এক্স-রে ও ডিএমপি (স্যাকমো) চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা,আল্ট্রাসনোগ্রাম ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার রির্পোট প্রদান করে রোগিদের সাথে চরম প্রতারণা করে আসছে।

এ সমস্থ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমটি ল্যাব, লক্কর-ঝক্কর অতি পুরাতন মেশিন পত্র, মহিলা এম টি’র সার্টিফিকেট ব্যবহার করে” নন এম টি”লোক দিয়ে কাজ করা, মেয়াদ উর্ত্তীন রিয়াজেন্ট, কোথাও রিয়াজেন্ট নেই, রক্ষিত ফ্রিজে মাছ মাংস রাখা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম ও বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষার কাজ করে আসছে এবং রোগিদের সাথে প্রতারণা করে অর্থ লুটিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ এইচ,এম বোরহান উল ইসলাম সিদ্দিকী। তিনি গত ২৪এপ্রিল তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে, গত ১৪ মে কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলাম জান্নাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিঠি দিয়ে লাইসেন্স, পরিবেশের সনদ, বর্জ ব্যবস্থাপনার সনদ, কর্মকর্তা কর্মচারীর তালিকা ও নিয়োগপত্র, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম পদবী কর্মস্থলের নামসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের নির্দেশ দেন। অন্যথায় অত্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এতেও বন্ধ হচ্ছে না দালাল দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগির সাথে প্রতারণার সহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ড।

ভুক্তভোগি গর্ভবতী রোগি সায়মা বেগম জানান, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করেছি কিন্ত আমার পেটে কি বাচ্চা আছে তা আমাকে জানাতে পারেনি। অথচ অনেক গুলো টাকা নিয়েছে। এমন অভিযোগের অন্ত নেই। দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেকে জানান, তাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের থেকে জোড় করে নিয়ে এসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের ফি নিয়ে স্থানীয় স্যাকমো চিকিৎসক দিয়ে ব্যবস্থাপত্র দেন, প্রতিবাদ করলে কিছু টাকা ফেরত দেন। গর্ভবতী মা‘দের চিকিৎসা করা হচ্ছে এমন চিকিৎসক দিয়ে। ফলে এখানে রোগিরা প্রতি নিয়ত প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। লুটিয়ে নেয়া হচ্ছে অর্থকরি। যেন দেখার কেউ নেই।

স্বাস্থ্য বিধি মোতাবেক সরকারী হাসপাতালের ২’শ গজের বাইরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকার নিয়ম থাকলে ও এখানে হাসপাতালের গেটের সাথে মার্ফি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্ট্রার, মা ডিজিটাল ল্যাব, এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জান্নাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শাহীদা ল্যাব ও দেশ ডায়াগনষ্ট্রিক সেন্টার দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে জান্নাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ওবায়দুল ইসলাম রানু জানান, লাইসেন্সসহ সব কাগজপত্র রয়েছে। কিন্ত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ এইচ এম বোরহান উল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, এ সমস্থ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগি হাইজ্যাক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্ত আমরা অসহায় অনেক চেষ্টা করে ও দালালদের দৌড়াত্ব বন্ধ করতে পারছি না। ফলে গরীব রোগিরা সরকারের দেয়া চিকিৎসা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ব্যপারে তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে, জবাব পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Ulipur.com