বাঁশি বাজিয়ে “কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস” উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বাঁশি বাজিয়ে “কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস” উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:

কুড়িগ্রামে প্রথম বারের মত যুক্ত হওয়া আন্তঃনগর ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন হয়েছে আজ।বুধবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কুড়িগ্রামে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুপুর ১২:২৫মিনিটে “কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস” নামে নতুন ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন ঘোষণা করেন।এর বাণিজ্যিক কার্যক্রেম চলবে । আগামীকাল(১৭ অক্টোবর) সকাল থেকে।

ট্রেন উদ্ধোধন কালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালীন দেশের রেল খাতে ব্যপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর পূনরায় অনেকগুলি রেলপথ সচল করি যা দেশের মানুষের উপকারে আসছে।

কুড়িগ্রামের আর্থ সামজিক উন্নয়নে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ভুমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।কুড়িগ্রামের নানান উন্নয়নের দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন,কুড়িগ্রামে অতীতে দারিদ্রতা থাকলেও এখন তা নেই।এজন্য আমরা অনেক কর্মসূচী গ্রহণ করেছি যা কুড়িগ্রামের উন্নয়ন ঘটাবে।এছাড়াও কুড়িগ্রামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরীর ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান শেষে মতবিনিময় কালে তিনি কুড়িগ্রাম সফরের নানান স্মৃতি চারণ করেন এবং ভাওয়ায়া গান শোনার জন্য নিজে আগ্রহ প্রকাশ করলে তাঁকে ভাওয়াইয়া গান পরেবেশন করা হয়।

মতবিনিময়ের একপর্যায়ে তিনি গৃহহীন পরিবারকে ঘর দান কর্মসূচীর এক উপকার ভোগীর সাথে কথা অনুভূতি বিনিময় করেন।

স্বাধীনতার পূর্ব থেকে ঢাকার সাথে রেল যোগাযোগ থাকলেও প্রথম বারের মত আন্তঃনগর ট্রেনের স্বাদ পেল কুড়িগ্রামবাসী। এতে স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়ন সহ বাণিজ্যিক কর্মকান্ডেরও উন্নতি ঘটবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তাই সকলের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করতে দেখা গেছে। পুরো স্টেশন প্রাঙ্গনকে এবং নতুন ট্রেনটিকে সুজজ্জিত করা হয়েছে।ট্রেনটি দেখতে ছুটে আসছেন নানান শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষ।

তবে আজ আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন হলেও আগামীকাল(১৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বাণিজ্যিক যাত্রার ঘোষণা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রধান চালক মোঃ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী চালক মোঃইউনুস আলীর নেতৃত্বে আজকের প্রথম যাত্রায় ট্রেনটি দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে রাতে কুড়িগ্রামে ফিরে আসবে।

ইতোমধ্যে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানান স্টেশন মাস্টার বাবু আল রশিদ। কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন,প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃজাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য,বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক,জেলা প্রশাসক মোছাঃ সুলতানা পারভীন,পুলিশ সুপার মোঃ মহিবুল ইসলাম খান,কুড়িগ্রামের সকল সাংসদ,রেলওয়ে কর্মকর্তা,সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তা,নানান রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,রেল নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণমটি সহ নানান শ্রেনী পেশার হাজার হাজার মানুষ।

রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন বলেন,কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরন করতে পেরে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।আমরা আরো ট্রেন আমদানী করার ব্যবস্থা করছি যেগুলো দেশের প্রায় সব জেলা গুলোতে রেল সেবা পৌছে দেবে।জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন,বহুদিনের আশার ফসল এই ট্রেনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কুড়িগ্রামের এই উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকুক। আমদানি করা পিটি ইনকা এমজি ১৪টি কোচ কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ৭৯৮ ডাউন নাম ধারণ করবে এবং ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম আসার পথে এটি ৭৯৭ আপ নাম ধারণ করবে। যাত্রাকালীন এতে মোট ৬২৬ টি আসন থাকবে। আর ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ফেরার সময় এতে ৫৯৬টি আসন থাকবে। এর মধ্যে ৮টি শোভন চেয়ার কারে সিট থাকবে ৬০ টি করে।২টি এসি চেয়ার কারে সিট থাকবে ৫৫ টি করে।২টি গার্ডব্রেকে শোভন চেয়ার সিট থাকবে ১৫ টি করে। ১টি এসি কেবিনে আসন থাকবে-দিনে (৭৯৮ ডাউন) ৩৩ টি, রাতে(৭৯৭আপ) ১৮ টি বার্থ এবং ১টি পাওয়ার কার সংযুক্ত থাকবে।

ভাড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার কাবিল উদ্দীন জানান,”শোভন চেয়ার ৫১০ টাকা, এসি চেয়ার ৯৭২ টাকা, এসি সিট ১১৬৮ টাকা এবং এসি বাথ ১৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।” বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতি বুধবার বাদে ৬ দিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন ত্যাগ করবে। আর ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়বে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। উভয় পথে ট্রেনটির বিরতি থাকছে রংপুর-বদরগঞ্জ-পার্বতীপুর-জয়পুরহাট-সান্তাহার-মাধনগর-ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনগুলোতে।

সূত্র:Railnewsbd.com