চিলমারীতে চিরনিদ্রায় শায়িত ‘ভাওয়াইয়া রাজা’ সফিউল আলম রাজা

চিলমারীতে চিরনিদ্রায় শায়িত ‘ভাওয়াইয়া রাজা’ সফিউল আলম রাজা

।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র পাড়ের জোড়গাছে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাংবাদিক ও ভাওয়াইয়া শিল্পী সফিউল আলম রাজা।

সোমবার সকাল ১১টায় চিলমারী উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম, জেলা পরিষদের সদস্য রেজাউল করিম লিচু ও রেডিও চিলমারীর স্টেশন ইনচার্জ বশির আহমেদসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এরপর খরখরিয়া ভেলকা মন্ডলের মাঠে চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে বাদ জোহর তার মরদেহ দাফন করা হয়। এর আগে রোববার রাতে ঢাকার পল্লবীতে প্রথম এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

রোববার দুপুরে ঢাকার পল্লবীতে সফিউল আলম রাজার প্রতিষ্ঠিত ভাওয়াইয়া গানের স্কুল কলতান-এর একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।

সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে তার মরদেহ ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে পৌঁছলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে কিছুক্ষণের জন্য রাখা হয়। সেখানে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয় সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ তার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সফিউল আলম রাজা ১৯৭১ সালে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার খরখরিয়া ভট্টপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রোতা-দর্শকরা সফিউল আলম রাজাকে ডাকেন ‘ভাওয়াইয়া রাজা’, কেউবা ডাকেন ‘ভাওয়াইয়ার রাজকুমার’, আবার কেউবা ডাকেন ‘ভাওয়াইয়া’র ফেরিওয়ালা’ বলে। একজন ভাওয়াইয়া শিল্পীর পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকও।

ওস্তাদ নুরুল ইসলাম জাহিদের কাছে সংগীতের তাত্ত্বিক বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করেন রাজা। তিনি বাংলাদেশ বেতারের ‘বিশেষ’ এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘প্রথম’ গ্রেডের শিল্পী।

শিল্পী জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত বেঙ্গল বিকাশ প্রতিভা অন্বেষণে লোকসঙ্গীতে (ভাওয়াইয়া গান নিয়ে) সারাদেশে শ্রেষ্ঠমান বিজয়ী নির্বাচিত হন রাজা। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে রাজার একটি মিক্সড অ্যালবাম এবং ভায়োলিন মিডিয়া থেকে একক অ্যালবাম ‘কবর দেখিয়া যান’ প্রকাশিত হয়েছে। ভাওয়াইয়ার প্রচার-প্রসারে রাজা ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ভাওয়াইয়া গানের দল’।

২০১১ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘ভাওয়াইয়া স্কুল’। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘উত্তরের সুরে’ প্লেব্যাক করেছেন। রাজা একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। দীর্ঘ ২৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে প্রায় ১৪ বছরের বেশি সময় দৈনিক যুগান্তরে কাজ করেছেন। সাংবাদিকতায়ও অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।

সূত্রঃ samakal