ব্রহ্মপুত্রে নিষেধাজ্ঞার ‍সুফলে এখন ইলিশ আসছে

ব্রহ্মপুত্রে নিষেধাজ্ঞার ‍সুফলে এখন ইলিশ আসছে

।।নিউজ ডেস্ক।।

২০১৭ সাল থেকে ইলিশ জোনভুক্ত কুড়িগ্রাম জেলায় ইলিশের বিচরণ ঘটে মূলত ব্রহ্মপুত্র নদে। তবে এখানে সচরাচর ইলিশ পাওয়া যায় না। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ভাটির নদ-নদীতে জাল ফেলা বন্ধ থাকায় ইলিশ উজানের দিকে আসার বেশি সুযোগ পায়।

এ কারণে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালের শেষে দিকে এর সুফল পাওয়া শুরু হয়েছে। এখন ব্রহ্মপুত্রে ইলিশ বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলার পাঁচ উপজেলাজুড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে অভিযান চালানো হয়।

জেলেরা বলছেন, এবার নদে ইলিশের পরিমাণ অত্যন্ত নগণ্য। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবু ইলিশ পাওয়ার আশায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ব্রহ্মপুত্র নদে ছিল জালের ছড়াছড়ি। মৎস্য বিভাগের নিয়মিত অভিযানে প্রতিদিন জব্দ করা হয়েছে শত শত মিটার জাল।

জেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, ২২ দিনে ২১৭টি অভিযানে ব্রহ্মপুত্র থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। তবে এসব জালে ইলিশ মিলেছে মাত্র ৩৫ কেজি। মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে মোবাইল কোর্ট ছিল ৯টি। এসব কোর্টের ২১৭টি অভিযানে পাঁচ জেলেকে দুই হাজার ২শ’ টাকা জরিমানা করা হয়। জাল জব্দ করা হয় দুই লাখ ৪৪ হাজার ৮৫০ মিটার। জেলেরা বলছেন, এ বছর ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের পরিমাণ অত্যন্ত কম। নদজুড়ে জেলে নৌকা আর ইলিশ জালের ছড়াছড়ি থাকলেও মাছ মিলেছে কদাচিৎ।

তবে জেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, প্রথম দিকে ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের বিচরণ অত্যন্ত কম থাকলেও ৩১ অক্টোবরের পর থেকে এর পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। মূলত সমুদ্র থেকে উজানের দিকে আসতে শুরু করার পর বিভিন্ন নদীতে জাল কিংবা নদ-নদীর নাব্য সংকটে বাধাগ্রস্ত হয়ে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে ইলিশ পৌঁছাতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে। ফলে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনের শেষ দিকে ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় (ডিএফও) জানান, ‘২২ দিনে প্রায় ১৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা সমমূল্যের জাল জব্দ করা হয়েছে। এ সময় প্রণোদনা হিসেবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার জেলেকে মোট ১৫০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা আবারও স্বাভাবিক নিয়মে নদ-নদীতে মৎস্য শিকারে নেমেছেন।’ইলিশের পরিমাণ কম হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলার নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণ ঘটে।

মূলত ভাটিতে আহরণ বন্ধ থাকলে উজানে আসার সুযোগ পায় ইলিশ। সমুদ্র থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত আসতে ইলিশ মাছকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। এই দীর্ঘ পথের মধ্যবর্তী নদ-নদীতে জাল কিংবা নাব্য সংকটে পরিব্রাজন বাধাগ্রস্ত হলে উজানে আসতে আরও বেশি সময় লাগে।

হয়তো এসব কারণে নিষেধাজ্ঞার প্রথম দুই সপ্তাহ ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের বিচরণ কম ছিল। তবে শেষের কয়েকদিন নদে ইলিশ আসার পরিমাণ বেড়েছে।

সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।