রাজারহাটে শিক্ষা অফিসারসহ সুপার অবরুদ্ধ ॥ এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

রাজারহাটে শিক্ষা অফিসারসহ সুপার অবরুদ্ধ ॥ এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

।।রফিকুল ইসলাম।।
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর আবু তাহের দাখিল মাদরাসার সুপার মজিবুর রহমান অভিনব কৌশল অবলম্বন করে গোপনে আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগের পায়তারা ফাঁস হওয়ায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ডিজির প্রতিনিধি, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও প্রতারক সুপারকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

খবর পেয়ে রাজারহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষা অফিসার ও সুপারকে উদ্ধার করে। এ সময় ডিজির প্রতিনিধি তাৎক্ষনিকভাবে মাদরাসা থেকে সটকে পড়ে।

সরজমিনে জানাযায়, ২০১৮ খ্রিঃ জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্রতিটি দাখিল মাদ্রাসায় ১ জন আয়া ও ১জন নিরাপত্তা প্রহরীর পদ সৃষ্টি করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদনকারী প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষার একদিন আগে অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর সোমবার মহিধর আবু তাহের দাখিল মাদরাসার সুপার নিয়োগ পরীক্ষার ভেন্যু প্রবেশ পত্রে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজে সকাল ১০ ঘটিকায় নির্ধারণ করে প্রার্থীদের মাঝে প্রবেশ পত্র বিতরণ করেন।

কিন্তু ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৩ ঘটিকায় সৈয়দপুরে অবস্থানরত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে সুপার ও সভাপতির পছন্দের প্রার্থীদের পরীক্ষা উক্ত প্রতিষ্ঠানে গ্রহন করার চেষ্টা করে সুচতুর সুপার মজিবুর রহমান। সুপার মজিবুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান হক বুলু উক্ত প্রতিষ্ঠানে আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরী পদ দু’টিতে ১৫ লাখ টাকা তাদের পছন্দের দুই প্রার্থীর নিকট গ্রহন করার অভিযোগ উঠেছে। সুপার মঙ্গলবার বিকেল ৩ ঘটিকায় ডিজির মনোনিত প্রতিনিধি ও রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফ-উজ-জামানকে নিয়ে চুপিসারে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পৌঁছিলে সৈয়দপুরে অবস্থানরত প্রার্থীদের অভিভাবক ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে ডিজির প্রতিনিধি মাদরাসা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সটকে পড়ে।

অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন সুপার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। খবর পেয়ে রাজারহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে সুপার মজিবুর রহমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলু ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অত্র প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষে জরুরী বৈঠক করে তাৎক্ষনিকভাবে অনিদ্দিষ্টকালের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়ে জনরোষ থেকে রক্ষা পান। প্রতারিত নিয়োগ পরীক্ষার্থী মো: আমিনুল ইসলাম ও মো: মমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, একই পরিবারের ৩ জন চাকুরী করার পরও ওই পরিবার থেকে আয়া পদে পুনরায় নিয়োগ দানের জন্য সুপার অত্র প্রতিষ্ঠানের নৈশ প্রহরী মুসা আলমের ভাবী নুপুর ও নিরাপত্তা প্রহরী পদে তার আপন ভাগিনা রিপন মিয়াকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে মনোনীত করেছেন।

এ খবর জানাজানি হলে ওইদিন সুপারের অপকর্মের বিরুদ্ধে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ভূক্তভোগী নিয়োগ পরীক্ষার্থী ও স্থানীয় নারী সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য মোছা: দুলালী বেগম সুপারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীসহ নিয়োগ বন্ধে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সুপার মজিবুর রহমান বলেন, আমি কোন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেইনি, সভাপতি নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে আমাকে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলুর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।