রাজারহাটে শিক্ষার্থী জিম্মি করে ভর্তি॥ এলাকায় উত্তেজনা

রাজারহাটে শিক্ষার্থী জিম্মি করে ভর্তি॥ এলাকায় উত্তেজনা

Rajarhatbd.com
রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি,
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলাধীন রাজমাল্লীরহাট ফাজিল(ডিগ্রী) মাদরাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সদ্য দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাদরাসায় ভর্তি দেখিয়ে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, ওই মাদরাসা থেকে এবারে দাখিল পরীক্ষায় ৪০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করলে ১৯জন পাস করে। পরে গোপনে ভূয়া অভিভাবক সাজিয়ে ১৮জন সদ্য দাখিল পাস শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করে ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। গতকাল আদরী আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে জানতে পারে অনলাইনে তার ভর্তির আবেদন পাঠানো হয়েছে। সে হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরে তার অভিভাবককে বিষয়টি জানালে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের ভর্তি বাণিজ্যের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

এর পর গতকাল রোববার আদরী আক্তারের মাতা মমতাজ বেগম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামানকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষকে মুঠোফোনে ভর্তি বাতিলসহ শিক্ষার্থীর পছন্দকৃত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সহযোগীতা করার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে অধ্যক্ষ অভিভভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সদ্য উত্তীর্ণকৃত শিক্ষার্থী জেমি, আনোয়ারুল হক, ইসমাইল হোসেনসহ অনেকের অভিভাবক জানান, অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে মাদরাসাটি দায়সারাভাবে চলে আসছে। বছরের প্রায় সময় অধ্যক্ষের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব। ফলে শিক্ষার মান দিন দিন নি¤œগামী হয়ে পড়েছে। তাই তাদের ছেলে-মেয়েরা ভর্তি হতে অনীহা প্রকাশ করে। তাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিতে নামমাত্র অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ভর্তি করানো হয়েছে।
তাই তারা ভর্তি বাতিল করে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশংসাপত্র, মার্কশিটসহ ছাড়পত্র দেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

অধ্যক্ষ মাওঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দাখিল পাস করলে এই মাদরাসায় ভর্তি হতে হবে, পূবেই এ রকম শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল। রোববার মাধ্যমিক স্যার নির্দেশ দিয়েছে। যারা এ মাদরাসায় ভর্তি হবে না তাদের কোড নম্বর দিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আশরাফ-উজ-জামান বলেন, বিষয়টি নির্ঘাত অন্যায়। লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এসএসসি-দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার ফলাফলের পর উপজেলা জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ, বাইসাইকেল, কলেজ ড্রেস ও বিনা বেতনে পাঠদান করানো লোভনীয় অফার দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহের মহোৎসব চলছে বলে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।