রাজারহাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জনসেবায় নিয়োজিত

রাজারহাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জনসেবায় নিয়োজিত

Rajarhatbd.com
রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি,
বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কুড়িগ্রামের রাজারহাটে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জনসেবায় নিয়োজিত হয়েছে। আগে অফিসটি ধূ¤্রজালে পরিপূর্ণ ছিল। মাত্র ৩০মিনিটে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অবস্থা সম্পর্কে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে।
অফিসটিতে রদবদল নিয়ে আসে। ফলে অফিসটির কার্যক্রম ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বলে দাবী করছে অফিসটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অফিসটি অবশেষে জনসেবায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু জনবল, আসবাবপত্র এবং ডিজিটাল মেশিন না থাকার কারণে ডিজিটাল অফিসে রুপান্তরিত হতে পারেনি অফিসটি আজও। ২০ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ১০মিনিট থেকে ৪০মিনিট ওই অফিসে অবস্থান করে দেখা যায়, ঘরের ভিতর নোংরা ময়লা-আর্বজনার পরিবর্তে অর্ধভাঙ্গা চেয়ার-টেবিল ও আলমারীগুলো পরিস্কার রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিত্যানন্দ বর্ম্মণ অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকার কারণে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। অফিস সহকারী কাম টাইপিষ্ট আক্তারুজ্জামান জানান, বস চিলমারী উপজেলার পুর্ণাঙ্গ দায়িত্বে এবং এই অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকার কারণে সপ্তাহে ২/৩দিন এই অফিসের বাইরে থাকতে হয় তাকে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও ভিএস মেশন জাহাঙ্গীর অসুস্থ্য থাকার কারণে ছুটিতে থাকায় তিনি বাদে সকল কর্মচারী উপস্থিত রয়েছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে অফিস সহকারী কাম টাইপিষ্ট আক্তারুজ্জামান, নলকূপ মেকানিক সিরাজুল হক, ভিএস মেশন আলমগীর হোসেন, নুরুজ্জামান, নৈশ প্রহরী আঃ রাজ্জাক রয়েছেন। এছাড়া নলকূপ মেকানিক ৩জন, এমএলএসএস ১জন, ভিএস লেবার ১জন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ১জনের পদ শুন্য রয়েছে। এবারে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এ উপজেলায় পল্লী পানি প্রকল্পের আওতায় ২২টি টিউবওয়েল, ৮টি ডাগ টিউবয়েল, ৫টি তারা টিউবওয়েল ও ১০০টি ল্যাট্রিন বরাদ্দ এসেছে।

যা অন্যান্য বছরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী। এছাড়া রাজারহাট উপজেলায় যেসব টিউবয়েল স্থাপন করা হবে বা হয়েছে সেগুলোর আর্সেনিক পানি পরীক্ষা করার জন্য কীটবক্্র রয়েছে। এছাড়া ভেঙ্গে যাওয়া ল্যাটিনগুলো স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের সুপারিশে মেরামত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০০সালে রাজারহাট উপজেলায় প্রায় ৫হাজার নলকূপ আর্সেনিক মাত্রাতিরিক্ত থাকায় লাল কালি দিয়ে চিহিৃত করে ওইসব নলকূপের পানি পান করা বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট বিভাগ। কিন্তু এগুলোর কোন ব্যবস্থা গ্রহন না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়েই ওই সব নণকূপের পানি পান করা শুরু করে দিয়েছেন। দিনে দিনে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে পড়ে মানুষজন। বর্তমানে রাজারহাট উপজেলায় ৭শতাধিক আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
এদের মধ্যে ১১৬জন রোগীকে চিহিৃত করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শহিদুল্লাহ্ জানিয়েছেন। ২০০১সালে রাজারহাট উপজেলাকে শতভাগ স্যানিটেশন ঘোষনা দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে কেন তা ভেঙ্গে পড়েছে? জানতে চাইলে এ সম্পর্কে নলকূপ মেকানিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত আগের চেয়ে অনেকটা উন্নত।
এখন শুধু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগই স্যানিটেশনের কাজ করে না। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগসহ কয়েকটি বেসরকারী সংস্থাও এসবের উপর কাজ করে যাচ্ছে। স্যানিটেশনের উন্নয়ন না হওয়ার অন্তরায় হলো যেসব এনজিও বা সংস্থা কাজ করছে তাদের ক্যারাইটরি হলো আগে হাইজিন সম্পর্কে অবহিত করা এবং বাড়ী বাড়ী গিয়ে পরিদর্শন পূর্বক স্যানিটেশন নিশ্চিত করার পর টিউবয়েল বিতরণ করা। এছাড়া যেসব এনজিও কিংবা ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেন, তাদের প্রথম ক্যারাইটরি হলো স্যানিটেশন।
কিন্তু তারা এসব না দেখেই গ্রাহকের কাছে ঋণ বিতরণ করছে। সকলে মিলে এলাকার জনসাধারণদের উদ্বুদ্ধকরণ করতে পারলে আবারো শতভাগ স্যানিটেশনে সফল হরে এ উপজেলায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। আর্সেনিক রোগীর কোন তথ্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে নেই বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের অফিস সহকারী আক্তারুজ্জামান বলেন, অফিসটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এখনো বাংলাদেশ ডিজিটাল হলেও এই অফিসটি ডিজিটাল হয়নি। কেননা অফিসে নেই কোন মানসম্মত আসবাবপত্র, নেই ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার, নেই লোকবল।
যার কারণে এখানে একটার পর একটা সমস্যা লেগেই থাকে। তবে ডিজিটাল না হলেও সকলের সহযোগীতায় অফিসটি আগের চেয়ে অনেকটা মানসম্মত করতে পেরেছি। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিত্যানন্দ বর্ম্মণ জানান, দু’টি অফিসের দায়িত্ব পালন করায় রাজারহাট জনস্বাস্থ্য অফিসটিতে সপ্তাহে ২দিন সময় দেয়া হয়।