রাজারহাটে মরিচ চাষে উজ্জল সম্ভাবনা পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা

রাজারহাটে মরিচ চাষে উজ্জল সম্ভাবনা পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা

রফিকুল ইসলাম:
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে মরিচ চাষের উজ্জল সম্ভবনা থাকা সত্বেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবসহ নানা সমস্যায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে মরিচ চাষীরা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার জমিগুলো চওড়া ও অতি উর্বর হওয়ায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি মসলা জাতীয় মরিচ চাষের ব্যাপক সাড়া ছিল চাষীদের মাঝে। ওই এলাকার জমি উর্বর হওয়ায় মরিচ চাষের অপার সম্ভবনা থাকা সত্বেও চলতি বছরেই তা থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ওই এলাকার কৃষকরা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে রবি মওসুমে বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ করে অনেক কৃষকই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছিল।

গত বছর ভয়াবহ বন্যার পর থেকে মরিচ ক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের মড়ক দেখা দেয়ায় লোকসানের ঘানি টানতে শুরু করে কৃষকরা। অনেকে দেনা- পাওনায় জর্জরিত হয়ে মরিচ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শনিবার সকালে ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর খন্ডক্ষেত চৌকিদার পাড়া এলাকায় ঘুরে শুধুমাত্র আক্কাস আলীর মরিচের ক্ষেত চোখে পড়ে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মরিচ চাষী সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মোস্তফা (৫৫)। তিনি জানান, আগে দেড় একর জমিতে মরিচ চাষ করে কয়েক লাখ টাকা আয় হয়েছে। সেই আশায় এবারো ৫০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করেছি। কিন্তু মরিচ ক্ষেতে থোবড়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ায় মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়।

আরো ওই এলাকার ফনিন্দ্র নাথের ২০শতক ও চঞ্চল কুমারের ২০শতকসহ ১০/১২জন চাষীর মরিচ ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যায়। তারা মরিচ ক্ষেতে কুকরাভিট, থিওভিট, ভার্টিস্কেল, রেডোমিল গোল্ড সহ বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক নাশক ওষুধ ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাইনি বলে জানান। এরপরেও আক্কাস আলী ৮০ শতক জমিতে দেশী মরিচ হেমতি (কাউনিয়া) জাতের মরিচ চাষ করে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছে। তার মরিচ ক্ষেতে মড়ক দেখা দিলেও ফলন ভাল হয়েছে বলে আশা ব্যক্ত করে বলেন, প্রতি শতকে ১মণ করে মরিচ ফলন হতে পারে। সে দুবার মরিচ তুলে বিক্রি করে বেশকিছু আয়ও করেছেন।

তার ক্ষেতের মরিচ তোলার শ্রমিক ইতি রানী, শিল্পী রানী, মর্জিনা, রাধা রানী ও হরি মতী বলেন, এ ক্ষেত থেকে ১০/ ১৫দিন পর পর মরিচ তোলা হয়। বর্তমানে প্রতিমণ মরিচ ৮শ থেকে ১হাজার টাকা পর্যন্ত পাইকারী দরে বিক্রি করা হয়। ওই এলাকার কুষকরা জানান, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মরিচ চাষের অনাগ্রহী চাষীরা আবারো মরিচ চাষে আগ্রহী হবে। এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, মরিচ হচ্ছে মসলা জাতীয় ফসল। আমরা কৃষকদের মরিচ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। আর সরকারী ভাবে কোন উপকরণ এলে আমরা অবশ্যই কৃষকদের দিয়ে সহযোগীতা করবো।